দৃশ্য এক: জন্মাষ্টমীর প্রস্তুতি নিয়ে সকাল থেকেই নবদ্বীপ-মায়াপুরে ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। নবদ্বীপের একটি মন্দিরের ভক্তরা গঙ্গা থেকে শোভাযাত্রা করে গঙ্গাজল নিয়ে আসছিলেন। শোভাযাত্রা তখন মাঝপথে, হঠাৎই কয়েক জনের মাথার মাটির কলসিভরা গঙ্গাজল চলকে পড়ে যায় তাঁদের গায়ে। পা যেন টলে ওঠে। অনেকেই মনে করেছিলেন সারাদিন উপবাসের জন্য হয়তো মাথা ঘুরছে। কিন্তু কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ফের... একই ঘটনা। কেঁপে উঠল মাটি।
এ বার আর বুঝতে দেরি হয়নি। ভূমিকম্প। উচ্চস্বরে নাম কীর্তন শুরু করে দেন শোভাযাত্রাকারী ভক্তের দল। মন্দিরনগরী কেঁপে ওঠে শাঁখ কাঁসর ঘণ্টা এবং উলুধ্বনিতে।
দৃশ্য দুই: সবে বিকেল চারটে। গুমোট গরমে এসিটা চালিয়ে দোতলার ঘরে মেয়েকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন নিবেদিতা চৌধুরি। হঠাৎ একটা দুলুনি। ঘুমন্ত মেয়ে সমেত যেন নড়ে উঠল খাটটা। ভুমিকম্প নাকি? ভাবতে ভাবতেই ফের দুলুনি। এ বার আরও জোরে। আর দেরি করেননি নিবেদিতা। ঘুমন্ত মেয়েকে কোনও রকমে কোলে তুলে নিয়ে ভয়ার্ত গলায় চিৎকার করে সোজা নিচের রাস্তায়। খেয়ালই নেই যে উপরে ঘরদোর সব হাট করে খোলা। তত ক্ষণে বহরমপুরের পঞ্চাননতলার রাস্তায় নেমে এসেছেন অনান্য বাড়ির বাসিন্দারাও। ভূমিকম্প কেঁপে ওঠা বহরমপুর জুড়ে বুধবার বিকেলে কেবলই শাঁখের আওয়াজ। শহরের গোরাবাজার নিমতলা মোড়, মোহনের মোড়, নতুনবাজার, বাসস্ট্যান্ড, খাগড়া প্রভৃতি এলাকায় তখন থিকথিকে ভিড়। শুরু হয়ে গিয়েছে পুজো এবং ইদের কেনাকাটা। ভূমিকম্পের পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহর জুড়ে। তবে খুব অল্প ক্ষণের জন্য কম্পন অনুভূত হওয়ায় কিছু ক্ষণের মধ্যেই জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে খুব অল্প ক্ষণের জন্য কম্পন অনুভূত হওয়ায় অনেকেই টের পাননি ভূমিকম্প হয়েছে। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত কোথাও কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।