Advertisement
E-Paper

নাবালিকার বিয়ে নয়, প্রচার স্কুলে

যে বয়সে তার মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়ানোর কথা, ঝড়ে পড়া আম কুড়িয়ে কোঁচড় ভরানোর কথা, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে নুনে জারানো আম চিবিয়ে দাঁত টক করার কথা, সেই বয়সে তাকে ঠেলতে হয় হেঁসেল। অপটু হাতে সামলাতে হয় সংসার। তারপর বছর না ঘুরতেই পেটে বাচ্চা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ০২:২০

যে বয়সে তার মাঠেঘাটে ঘুরে বেড়ানোর কথা, ঝড়ে পড়া আম কুড়িয়ে কোঁচড় ভরানোর কথা, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে নুনে জারানো আম চিবিয়ে দাঁত টক করার কথা, সেই বয়সে তাকে ঠেলতে হয় হেঁসেল। অপটু হাতে সামলাতে হয় সংসার। তারপর বছর না ঘুরতেই পেটে বাচ্চা। ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় ভাগ্য যদি ভাল থাকে তবে সে যাত্রায় রক্ষে। না হলে অক্কা। নিঃশব্দে হারিয়ে যায় এক ‘দুর্গা’। এই স্মার্টফোন, হোয়াটসঅ্যাপের যুগেও।

দুর্গাদের যাতে আর এ ভাবে হারিয়ে যেতে না হয় তার জন্য এগিয়ে এল বেলডাঙার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সোমবার এলাকার মানুষজনকে সচেতন করতে বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় এক সচেতনা শিবির। বিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এ দিন সকালে ৯টা থেকে ১১টা পযর্ন্ত বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে ওই শিবির করে। হাজির ছিলেন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী-সহ প্রায় ২৫০ জন গ্রামবাসী। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ মিশন প্রাথমিক বিদ্যাপীঠের শিক্ষক, স্থানীয় প্রবীণ মানুষ, স্থানীয় মসজিদের ইমাম প্রমুখ। সংস্থার হয়ে মৃণালকান্তি সাহা ও দিলীপ দে বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে আলোচনা করেন।

ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক জানান, সুতিঘাটা গ্রামে কমবেশি ১৩০০ মানুষ বাস করেন। গ্রামে বাল্যবিবাহ একটা পীড়া। গত তিন বছরে অন্তত পনেরো জন নাবালিকার বিয়ে হয়েছে। তবে ইদানীং পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের সচেতনতা শিবির যদি ঘনঘন হয় তবে গ্রামে নাবালিকাকে বিয়ের দেওয়ার সংখ্যা খানিক কমবে।’’

শিক্ষক সেলিম উর রহমান জানান, গ্রামের মানুষ বাল্যবিবাহের কুফলগুলো বুঝতে পারছেন। গত এক বছরে গ্রামের যে তিন নাবালিকার বিয়ে হয় তাদের মধ্যে দু’জনকে তাদের স্বামী ত্যাগ করেছে। তারা বাবা-মার বাড়িতে ফিরে এসেছে। তাদের বাবা-মা এখন বুঝতে পারছেন মেয়ের এ ভাবে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কত ভুল ছিল। তিনি বলেন, ‘‘তাই দেখে গ্রামের মানুষ সচেতন হচ্ছেন। সেই সঙ্গে এই ধরনের সচেতনতা শিবিরও বাল্যবিবাহ রোধে কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছে।’’

মঞ্জুরি বিবি বলেন, ‘‘দারিদ্রতার কারণে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। এখন মেয়ে বাড়ি চলে এসেছে। নাবালিকার বিয়ে দিলে কত সমস্যাই না হয়।’’

বেলডাঙা-১ ব্লকের বিডিও শুভ্রাংশু মণ্ডল বলেন, ‘‘আগে ওই গ্রামে অনেক নাবালিকার বিয়ে হত। এখন সে সংখ্যাটা কমেছে।’’

Child marriage campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy