ট্রেন ধরতে ভিড় চাকরিপ্রার্থীদের। কল্যাণী স্টেশনে। ছবি: প্রণব দেবনাথ
অ্যাডমিড কার্ডে লেখা পরীক্ষা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের ‘কুইন্স গার্লস হাইস্কুল’। অথচ, রবিবার পরীক্ষা দিতে এসে পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন, এটি তাঁদের কেন্দ্র নয়। ফলে, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদেরকে পরীক্ষায় বসতে দিতে রাজি নয়।
বিষয়টি জানার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষার্থীরা। তাঁরা স্কুলের ভিতরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তারা এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রায় এক ঘণ্টা পরে অন্য কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে এসে ওই স্কুলে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যদিও বেশ কিছু পরীক্ষার্থী তাতে রাজি হননি। বিক্ষুব্ধ ওই পরীক্ষার্থীরা এর পর ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে রাস্তা থেকে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়।
রবিবার ছিল খাদ্য দফতরের সার্কেল ইনস্পেক্টর পদে নিয়োগের পরীক্ষা। নদিয়া জেলায় এ দিন মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৮৪ হাজার ৩৯৫ জন। পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল মোট ২০৬টি। তার মধ্যে কৃষ্ণনগরের কুইন্স গার্লস হাইস্কুল ছিল অন্যতম। সেখানে ১৯০ জন পরীক্ষার্থীর সিট পড়েছিল। এ দিন দুপুর একটা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত ওই পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সেইমতো আয়োজনও করে রেখেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এর পর সাড়ে বারোটায় গেট খোলার পরে সকলেই ভিতরে ঢুকে নির্দিষ্ট আসনে বসতে যান। তখনই প্রায় ১৩০ জন পরীক্ষার্থী দেখেন যে, তাঁদের জন্য কোনও আসন নির্দিষ্ট করা নেই। তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানতে চান। পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর মিলিয়ে দেখে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন যে, এই পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র এই স্কুল নয়। তার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দিশেহারা ওই পরীক্ষার্থীরা।
নিয়োগের পরীক্ষা দিতে আসা সাজ্জদ শেখ, দিবাকর দেবনাথরা বলছেন, “প্রথমে আমাদের যে অ্যাডমিড দেওয়া হয়েছিল, সেখানে পরীক্ষা কেন্দ্র লেখা ছিল চকদিগনগর তারকদাস মেমোরিয়াল হাইস্কুল। পরে সেটা বদলে করে হল কুইন্স গার্লস হাইস্কুল। অথচ, এসে দেখি, এটাও আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্র নয়!”
ওই পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, পরীক্ষা নিচ্ছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। সে ক্ষেত্রে সবই তাদের দায়িত্ব। পরীক্ষার আয়োজন করার দায়িত্ব ছিল জেলা প্রশাসনের উপরে। এই পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরে জেলা প্রশাসনের তরফে পাবলিক সার্ভিক কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ‘গাইডলাইন’ মেনে এক ঘণ্টা পরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। মোট ৭০ জন পরীক্ষা দিয়েছেন।
জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “আমরা অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে সকলকেই পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দিয়েছিলাম। সিংহভাগই পরীক্ষা দিয়েছে।”
যদিও অনেকে এতে রাজি হননি। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এটি পরীক্ষার নামে প্রহসন। কারণ, এ ভাবে পরীক্ষা দিয়ে লাভ হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy