বিকিকিনি। ন্যায্যমূল্যের দোকান লালবাগের একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
ক্লাসে অঙ্ক করার সময় ব্যাগে হাত দিয়ে দেখে খাতার পাতা শেষ। বিষয়টি বলতেই শিক্ষকের কাছে বকুনি খেতে হয়েছিল তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া রাজ মন্ডলকে। অন্য দিকে ক্লাস চলাকালীন কলমের কালি শেষ হয়ে যাওয়ায় স্কুলের বাইরে কলম কিনতে ছুটতে হয়েছিল তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র সুমন মন্ডলকে।
পড়ুয়াদের ওই ধরণের সমস্যা দূর করতে স্কুলেই নায্যমূল্যের দোকান চালুর সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকেরা। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। লালবাগের দুটি প্রাথমিক স্কুলে রমরমিয়ে চলছে ন্যায্যমূল্যের দোকান।
লালবাগের শিশু ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয় দেড় বছর আগে এবং দু’বছর আগে লালবাগেরই কুতুবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় দু’বছর আগে নায্যমূল্যের দোকান খুলেছে।
এর ফলে পড়ুয়াদের সমস্যা দূর হয়েছে, তেমনি পড়ুয়ারা কম দামে খাতা কলম, স্কেচ-পেন, স্কেল, রুল রাবার কিনতে পারছে। সেই দোকানে প্রত্যেক পড়ুয়ার সমবায় কিংবা ব্যাঙ্কের ধাঁচে অ্যাকাউন্ট নম্বর রয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টে প্রত্যেক পড়ুয়া বছরের যে কোনও সময়ে অ্যাকাউন্টে ৫-৫০ টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারে এবং জমার টাকা থেকে তারা খাতা কলম কিনতে পারবে। আবার অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলে ধারে জিনিসপত্র কেনার সুযোগ রয়েছে। কুতুবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহামুদাল হাসান বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের অধিকাংশই গরীব পরিবারের। ফলে খাতা কলম শেষ হয়ে গেলে কিনতে দেরি হয়।’’ শিশু ভারতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুজয় চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘ ক্লাস চলাকালীন পড়ুয়াদের অনেক সময় খাতা কলম কিংবা রুল শেষ হয়ে যায়। অনেকে বাইরের দোকানে খাতা কলম কিনতে যাওয়ার বায়না করে। সেখান থেকেই নায্যমূল্যের দোকান খোলার ভাবনা।’’
ওই দুটি স্কুলে মাসে প্রায় দু’হাজার টাকা পর্যন্ত জিনিসপত্র বিক্রি হয় বলে জানা গিয়েছে। শিশু সংসদের সদস্যরা স্কুল শুরুর আগে এবং টিফিনের সময় বিভিন্ন উপকরণ দেয়, তারা হিসেবও রাখে।
এবারে হরিহরপাড়ার ট্যাংরামারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ওই দুটি স্কুলের পথে হাঁটতে চলেছে। প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার অধিকারী বলছেন, ‘‘স্কুলে নায্যমূল্যের দোকান থাকলে পড়ুয়াদের উপকার হয়। সে কথা মাথায় রেখে নায্যমূল্যের দোকান খোলার পরিকল্পনা করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy