অমর রায়।
তোলা আদায় থেকে গুলি চালানো— ঝাঁক বাঁধা অভিযোগ নিয়েও দিব্যি দলেই রয়ে গিয়েছিলন তিনি। একেকটা অভিযোগ উঠলেই কলকাতা থেকে উড়ে আসত সতর্ক বার্তা। তার পর দিন কয়েক নিঝুম থাকার পরে ফের গা ঝাড়া দিয়ে উঠতেন তিনি।
অমর-কথার বিরাম ছিল না!
গত মাস কয়েক ধরে নাগাড়ে দলের মুখ পুড়িয়ে চলা কল্যাণীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অমর রায়কে আর যে ‘টানা’ সম্ভব হচ্ছে না, দিন কয়েক আগে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নদিয়ার এক তাবড় জেলা নেতা। বৃহস্পতিবার, দিনভর তার বাড়ি তল্লাশিতে কয়েক লক্ষ টাকার জাল ওষুধ পাওয়ার পরে আর ঝুঁকি নেয়নি দল। এ দিন বিকেলে দল থেকেই বহিষ্কার করা হয় তাকে।
এ দিন চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি অমরের সঙ্গে। তবে, নদিয়া তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত জানিয়ে দেন, অমরকে পার্টি থেকে ‘তাড়িয়ে’ দেওয়া হয়েছে। জানাচ্ছেন, সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছিল। অপেক্ষা ছিল কার্যকর করার। গৌরীশঙ্কর বলেন, ‘‘দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে অমর রায়কে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু কোন অভিযোগে? তাঁর জবাব, ‘‘জেএনএম হাসপাতালের আয়াদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ ছিল ওর বিরুদ্ধে।’’ কিন্তু, তাড়িয়ে দেওয়া মানে কী, বহিষ্কার না সাময়িক বরখাস্ত। এ ব্যাপারে ফের মুখে কুলুপ এঁটে বসেছেন জেলা সভাপতি।
উদ্ধার হওয়া ওষুধপত্র।
কল্যাণীর বিভিন্ন হাসপাতালে অ্যাম্বুল্যান্স সিন্ডিকেট, আয়া এমনকী রোগীদের বাড়ির লোকের কাছে তোলা আদায়ের পাশাপাশি সরকারি জমি বিক্রিও অভিযোগ ছিল অমরের বিরুদ্ধে। এমনকী, বাড়িতে আয়ারা বিক্ষোভ দেখাতে গেলে গুলি ছোড়ার অভিযোগও করেছিলেন আয়ারা।
অমর এবং তার চার ছেলে যে জাল ওযুধের কারবার করে, সে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। হাসপাতালের বাইরে তাদের একটি বড় ওষুধের দোকানও রয়েছে। সেই দোকান থেকেই বিক্রি হত জাল ওষুধ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কল্যাণীর মহকুমাশাসক স্বপন কুণ্ডুর নেতৃত্বে অমরের বাড়িতে শুরু হয় জাল ওষুধ উদ্ধার। সেই দলে ছিলেন এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্যও। স্বপনবাবু জানান, বাজেয়াপ্ত ওষুধের বাজার মূল্য প্রায় দশ লক্ষ টাকা।
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy