জ্যৈষ্ঠ শুরুর ঝড়-বৃষ্টি। আর তাতেই ব্যাপক ক্ষতি হল ফসলের। বিঘার পর বিঘা ক্ষতি হয়েছে কলা বাগানের। শনিবারের ঝড়ে রেহাই পায়নি পেঁপে বাগান, তিল চাষও। তেহট্ট ১ ও ২ ব্লক সহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় এক ছবি। রবিবার কৃষি আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস বলেন, “আগামী দু-তিন দিন ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।”
সাময়িক ভাবে ওই ঝড়বৃষ্টিতে গরম কমলেও মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। আচমকা ঝড়ে একটি টিনের ঘরের উপরে গাছ ভেঙে পড়ে। অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় পরিবারটি। বেতাই উত্তর জিতপুরের স্বপন টিকাদারের টিনের বাড়িতে ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়েছে। তবে কেউ জখম হননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট ১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় কলার চাষ হয়। লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে বেশিরভাগ চাষি এই চাষে ঝুঁকছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঁচ করা হয়েছিল আগেভাগেই। যে কারণে চাষিরা সপ্তাহ তিনেক আগে থেকেই ফসল বাঁচাতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তাঁরা কলা গাছ বাঁচানোর জন্য বাড়তি খরচ করে বাঁশের ঠেকনি দিয়েছিলেন।
বেশ কিছু বছর ধরে পাট চাষের পরিবর্তে এলাকার অনেকেই পেঁপে চাষ করছেন। কলা, পেঁপের পাশাপাশি তিল চাষের প্রবণতাও বেড়েছে। একই সঙ্গে এ বার ব্যাপক ভাবে পাট চাষ হয়েছে। জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় প্রচুর ঝড়বৃষ্টি হয় তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকে। এর ফলে চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তেহট্ট ১ ও ২ ব্লকের বয়েরবান্ধা, খাসপুর, বেতাইয়ের বিভিন্ন জায়গা, তেহট্ট, চকবিহারি, বার্নিয়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমিতে কলা গাছ ভেঙে গিয়েছে। বেতাইয়ের বিভিন্ন অংশ, চাপাগাড়া মাঠ, সীমান্তবর্তী এলাকায় পেঁপের বাগান ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে। তিলের জমিতে গাছ ভেঙেছে। পাশাপাশি, প্রবল বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে জমিতে।
তবে এ দিনের বৃষ্টিতে পাট চাষের কোনও ক্ষতি হয়নি। বরং চাষের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এই বৃষ্টি পাট চাষে খুবই উপকারে লাগবে। আমন ধানের মরসুম আসছে। ফলে, এই বৃষ্টির জল চাষিরা কাজে লাগিয়ে জমি প্রস্তুত করতে পারবেন। তবে জমিতে জল জমলে তা বের করার ব্যবস্থা করতে হবে।”
দিয়ারের মাঠের মিহির মণ্ডল, দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “ঝড়ে কলা বাগান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমারা এই কলা চাষের উপরে নির্ভর করি। দুই বিঘার কলা বাগানের সব গাছ ভেঙে গিয়েছে।” বেতাইয়ের বাবলু বিশ্বাস, দীপেন ঘোষ বলেন, “রবিবার সকালে গিয়ে দেখি, বাগানের সব কলা গাছ মাটি শুদ্ধ উপড়ে গিয়েছে। বেশ কয়েক বিঘা পেঁপে বাগান করেছিলাম। সেই পেঁপে বাগানেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।” সীমান্ত এলাকার চাষি ভুবন মণ্ডল, দিবাকর দত্ত বলেন, “তিন বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছি। এমনিতে নিচু জমি। ঝড়ে গাছ ভেঙেছে, আবার জল জমেছে জমিতে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)