E-Paper

খরচ কম, পাট ছেড়ে ভুট্টা চাষে মন চাষিদের

এলাকার পাট চাষিদের একাংশ জানান, কয়েক বছর ধরে রোপণ থেকে পাট ঘরে তোলা পর্যন্ত যা খরচ হয়েছে, সেই পাট বিক্রি করে খরচের টাকা উঠছে না।

সাগর হালদার  

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১৫
ভুট্টা চাষ। নদিয়ার বেতাইয়ে।

ভুট্টা চাষ। নদিয়ার বেতাইয়ে। ছবি: সাগর হালদার।

পাটের পরিবর্তে ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে তেহট্ট ১ ব্লকে। বিশেষ করে বেতাই এলাকায় চাষিদের মধ্যে এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাঁদের দাবি, ভুট্টায় চাষে খরচ অনেক কম। আবার খাটুনিও কম।

চাষিদের একাংশ জানান, পাট চাষে জমি তৈরি থেকে পাট জাঁক দেওয়া পর্যন্ত প্রচুর খরচ হয়। জাঁক দেওয়ার আগে পাট কেটে জলাশয়ে বয়ে নিয়ে যেতেও অনেক শ্রম লাগে। বেতাই এলাকার বহু চাষি জানিয়েছেন, এলাকার অনেক শ্রমিক ভিন‌্ রাজ্যে কাজে গিয়েছেন। ফলে শ্রমিক পাওয়ার সমস্যা লেগেই থাকে। পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে পাটের আশানুরূপ দাম মেলেনি। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন পাট চাষিরা। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত বৃষ্টি না-হলে পাট পচাতে জলাশয়ের খোঁজে হন্য হতে হয়। এ সবের কারণে অনেক চাষি পাট চাষের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।

এলাকার পাট চাষিদের একাংশ জানান, কয়েক বছর ধরে রোপণ থেকে পাট ঘরে তোলা পর্যন্ত যা খরচ হয়েছে, সেই পাট বিক্রি করে খরচের টাকা উঠছে না। এ ছাড়াও রয়েছে পাট চাষির বিরামহীন খাটুনি। ভাগচাষিরা কয়েক বছর ধরে পর পর লোকসানের পর মহাজনের টাকা শোধ করতে না-পেরে পাট চাষের পরিবর্তে বিকল্প চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তুলনায় অনেক কম খরচ এবং অধিক লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।

চাষি রঞ্জিত বিশ্বাস, সুজয় ঘোষেরা জানান, বেতাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষত চাঁপাগাড়া মাঠে ১ বিঘা জমিতে পাট চাষ করে শুকিয়ে ঘরে তোলা পর্যন্ত কমবেশি কুড়ি হাজার টাকা খরচ হয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এক বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করলে ঘরে ফসল পৌঁছে যায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও খুবই কম। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও ক্ষতির সম্ভাবনাও কম। বৃষ্টির জল ভুট্টা জমিতে পক্ষকালের বেশি জমে থাকলেও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। এ ছাড়াও প্রতি বছর শিলাবৃষ্টির কারণে পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে শিলাবৃষ্টিতেও ভুট্টায় কিছু ফসল ঘরে তোলার সম্ভাবনা থাকে। তাঁরা আরও জানান, পাট চাষে রয়েছে শ্রমিক সঙ্কট ও মজুরি বৃদ্ধি। যে কারণে এলাকার অনেক চাষি পাট চাষ না-করে ভুট্টা চাষ শুরু করেছেন। ভাল জাতের বীজ রোপণ করতে পারলে ১৫ থেকে ২০ কুইন্টাল ভুট্টা ফলে। প্রতি কুইন্টাল গড়ে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করলেও খরচ বাদ দিয়ে বেশ কিছু টাকা হাতে আসে।

তেহট্ট ১ ব্লকের সহ-কৃষি আধিকারিক আনন্দকুমার মিত্র বলেন, ‘‘ভুট্টা একটি ভাল অর্থকরী ফসল। ভুট্টা মূলত তিন মাসের ফসল। হাইব্রিড জাতীয় ভুট্টা চাষে প্রচুর ফলন পাওয়া যায়। তবে পাট চাষের ক্ষেত্রেও সরকার পাট চাষিদের সাহায্য করছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tehatta

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy