দোকানে আতশবাজি বিক্রির অনুমতি ছিল। কিন্তু ওই দোকানের আড়ালেই অবৈধ ভাবে বাজির কারখানা চলত। কল্যাণীর রথতলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে এমনটাই জানতে পেরেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিস্ফোরণে জখম হয়েছেন দোকানের মালিক খোকন বিশ্বাসও। কিন্তু হাসপাতালে না গিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। আপাতত তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে কল্যাণীর রথতলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তাঁদের নাম বাসন্তী চৌধুরী, অঞ্জলি বিশ্বাস, রুমা সোনার এবং দুর্গা সাহা। এক মহিলা গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর নাম উজ্জ্বলা ভুঁইয়া। স্থানীয় সূত্রে খবর, দোকানের আড়াতেই বাজি কারখানা চালাতেন খোকন। সেখানে পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে ৮-১০ জন শ্রমিক কাজ করতেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ, ঘটনার সময়েও পাঁচ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন।
আরও পড়ুন:
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই রথতলায় আতশবাজির ব্যবসা করেন খোকন। আতশবাজির আড়ালে সেখানে শব্দবাজি বিক্রি করা হত। এর পর ধীরে ধীরে নিজেই বাজি বানাতে শুরু করেন খোকন। প্রাথমিক ভাবে মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের দুই শ্রমিককে নিয়ে এসে কারখানার কাজ শুরু হয়। পরে স্থানীয় মহিলারাও কাজে যোগ দেন। আতশবাজি তৈরির পুরো দায়িত্বই ছিল চার মহিলা শ্রমিকের উপর। শব্দবাজি তৈরি করতেন মুর্শিদাবাদের দু’জন শ্রমিক। তবে সবটাই হত একটি ঘুপচি ঘরে। ঘটনার পর থেকে পলাতক খোকন। তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় এই বেআইনি কারখানা এত দিন ধরে কী ভাবে চলছিল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। তিনি বলেন, ‘‘এ রকম কিছু ঘটনা ঘটলে তখন পুলিশ ব্যবস্থা করে। পুলিশ সবটাই জানত। এর থেকেই বোঝা যায়, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। সবটাই তৃণমূলের কুটির শিল্প।’’
ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন ২০ ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত চক্রবর্তীও। তাঁর দাবি, ‘‘এটা কোনও বাজি কারখানাই নয়। বাড়ির মধ্যে বাজি তৈরি চলছিল।’’