Advertisement
০৫ মে ২০২৪
JNM Hospital

জেএনএমেও চলে ‘র‌্যাগিং’, দাবি প্রাক্তনের

প্রাক্তন পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, যাদবপুরের মতোই কলেজের হস্টেলগুলিতে প্রাক্তন ছাত্রের দাপট চলে। পড়াশোনার পর্ব শেষ হয়ে গেলেও নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে তাঁরা হস্টেলের ঘর দখল করে থাকেন।

জেএনএম হাসপাতাল কল্যাণী।

জেএনএম হাসপাতাল কল্যাণী।

অমিত মণ্ডল
কল্যাণী  শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২৩ ০৮:১৫
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্রের মৃত্যুর পর র‍্যাগিং নিয়ে গোটা জুড়ে হইচই চলছে। আর তার মধ্যেই কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের (জেএনএম) প্রাক্তন পড়ুয়াদের একাংশ দাবি করছেন, সেখানেও র‍্যাগিং ও দাদাগিরির সংস্কৃতি বহমান।

গত বেশ কয়েক বছরের মধ্যে ওই মেডিক্যাল কলেজের অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটির কাছে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অথচ প্রাক্তন পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই জেএনএমের হস্টেলেও র‍্যাগিংয়ের শিকার হতে হয় নবাগতদের। ‘ইন্ট্রো’ দেওয়ার নামে সিনিয়রদের নির্দেশে তাঁদের নানা মানসিক যন্ত্রণার কাজ করতে হয়। তা ছাড়া ফতোয়া দেওয়া হয়, সিনিয়রদের সামনে ফোন ব্যবহার করা যাবে না। তাঁদের সামনে ফোন ধরলে সারা রাত ধরে তাঁদের কাজ দেওয়া হবে। যত দিন না প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের নবীনবরণ উৎসব হচ্ছে, তত দিন চলে এই যন্ত্রণা। ছাত্রদের হস্টেলের ছাদে এবং ছাত্রীদের কমন রুম অথবা ক্যান্টিনে র‍্যাগিং করা হয় বলেও অভিযোগ। নবাগতেরা ভয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বা অ্যান্টি-র‍্যাগিং কমিটির কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন না।

ওই প্রাক্তন পড়ুয়াদের আরও অভিযোগ, যাদবপুরের মতোই কলেজের হস্টেলগুলিতে প্রাক্তন ছাত্রের দাপট চলে। পড়াশোনার পর্ব শেষ হয়ে গেলেও নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে তাঁরা হস্টেলের ঘর দখল করে থাকেন। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে কাজে ঢুকে গেলেও হস্টেলে ঘর ছাড়েন না তাঁরা। পাশাপাশি রয়েছে কলেজের তৃণমূলপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের চাপ। অনেক সময়েই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জুনিয়র-সিনিয়রদের কাউকে কাউকে নানা হুমকির মুখে পড়তে হয়। কেউ যদি কোনও অভিযোগ তোলেন, তাঁর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ ছড়ানো শুরু হয়। এমনকি হস্টেল চত্বরে কোনও কিছু ঘটলে পুলিশকে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয় না। যেমন সেই রাতে যাদবপুরের হস্টেলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি পুলিশকে।

এতেই শেষ নয়। ‘চাঁদা’র জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগও আছে।

জেএনএম সূত্রে জানা গিয়েছে, সামনেই কলেজের ছাত্রছাত্রীদের বার্ষিক উৎসব। তার জন্য হাসপাতালের হাউস স্টাফদের মাথাপিছু প্রায় তিন থেকে চার হাজার টাকা দিতে হয়। এ বার কলেজের ৭২ জন হাউস স্টাফ সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় ছাত্র ইউনিয়ন থেকে চাপ আসছে বলে অভিযোগ। হাউস স্টাফদের একাংশের দাবি, তাঁদের দেওয়া টাকা ইউনিয়নের কেউ কেউ যথেচ্ছ ভোগ করে। আর সমস্ত কিছু জেনেও কলজে কর্তৃপক্ষ চুপ করে থাকেন। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও রকম সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে প্রাক্তন পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ।

তবে কলেজের তৃণমূলপন্থী ছাত্র ইউনিয়নের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে সংগঠনের সভাপতি আবদুল আলিম বিশ্বাসের দাবি, “এই বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।” আর কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের এখানে র‍্যাগিং হয় না। তার জন্য হস্টেলগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyani Ragging
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE