মাখা সন্দেশ আর পান্তুয়া বড় প্রিয় ছিল ছেলেটার। প্রিয় ফল ছিল আপেল। সেই প্রিয় মিষ্টি, ফল, গীতা আর সাদা কাপ়ড়ে গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের মৃত পড়ুয়ার। সোমবার নদিয়ার বগুলার বাড়িতে ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেন বাবা রামপ্রসাদ কুন্ডু। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না মা স্বপ্না। ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সময় বেশ কয়েক বার জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেন তিনি।
গত বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়েছিলেন প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়া। এর পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরেই বৃহস্পতিবার রাতেই মৃত পড়ুয়ার দেহ নদিয়ায় বাড়িতে এনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে পরিবার।
পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী। বাকি দু’জন মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়েরই বর্তমান পড়ুয়া। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়ার উপর অত্যাচার চলেছে। তার নেপথ্যে আরও অনেকে জড়িয়ে রয়েছে বলেই অনুমান তদন্তকারীদের। সোমবার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের সময় ছেলের ছবি ছুঁয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করার প্রতিজ্ঞা নেন রামপ্রসাদ। তিনি বলেন, ‘‘শাস্ত্রীয় মতে আজ ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন হল। তবে যে দিন ছেলের মৃত্যুতে জড়িতদের শাস্তির উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে পারব, সেই দিনই হবে আসল শ্রাদ্ধানুষ্ঠান! ছেলের ছবি ছুঁয়ে এই শপথ নিলাম।’’
(পশ্চিমবঙ্গ শিশু সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী রবিবার তাঁর একটি ফেসবুক পোস্টে যাদবপুরের মৃত ছাত্রের নাম না-লিখতে অনুরোধ করেছেন। এই মৃত্যুমামলা অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর যৌন নির্যাতন বিরোধী ‘পকসো’ আইনে হওয়া উচিত বলেও তাঁর অভিমত। কমিশনের উপদেষ্টার অনুরোধ মেনে এর পর আনন্দবাজার অনলাইন মৃত ছাত্রের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy