দোকানে পড়ে রয়েছে গয়না। ক্রেতা প্রায় নেই বললেই চলে। নিজস্ব চিত্র
সোনার দাম রেকর্ড ছুঁয়েছে। তাই স্বর্ণশিল্পী ও সোনার ছোট কারবারিদের রুজিরুটিও জোর ধাক্কা খেয়েছে।
অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন, বছরের সব থেকে বড় বিয়ের মরসুম। স্বর্ণশিল্পীরা প্রধানত এই সময়টার দিকেই তাকিয়ে থাকেন। অতিমারির জন্য ব্যবসায় বড় রকমের ক্ষতি হলেও, এ বারে ব্যবসা ভাল হবে এই আশায় তাঁরা বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু তখনই সোনার দাম বাড়তে শুরু করেছে।
সোনার দাম গত দু’মাসে প্রায় ১০ হাজার টাকা বেড়েছে। ফলে বিয়ের অলঙ্কার থেকে দৈনন্দিন ব্যবহারের অলঙ্কার তৈরি, সবই এক রকম থমকে রয়েছে। মানুষ ভাবছেন সোনার দাম না কমলে গয়না তৈরি স্থগিত রাখা ভাল। গ্রামাঞ্চলে অনেকে সোনা এখনও ভরিতে হিসাব করেন। ১ ভরি ১১.৬৬৪ গ্রাম বলে ধরা হয়। সেই হিসাবে গত দু’মাস আগে সোনার ভরি ছিল ৫৬ হাজার টাকা, সেটা ৬৫ হাজার অতিক্রম করেছে।
বেলডাঙার প্রবীণ স্বর্ণশিল্পী কিশোর ভাস্কর বলেন, “সোনার দাম ভরিতে এখনও চলে। ভরির হিসাবে গত দু’মাসে সোনা ৫৬ হাজার থেকে ৬৫ হাজার অতিক্রম করেছে। ফলে বৃদ্ধি প্রায় দশ হাজার টাকা। বিয়েবাড়িতে এত নগদ এক সঙ্গে থাকছে না। তাই সোনার দাম বৃদ্ধিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ছোট কারবারি ও স্বর্ণশিল্পীরা।”
বহু কাল ধরে বেলডাঙায় সোনার নাকছাবির কদর রয়েছে। বেলডাঙা থেকে নাকছাবি সরবরাহ হয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত সহ দেশের নানা প্রান্তে। কয়েকশো মানুষ এই পেশায় যুক্ত। কিন্তু সোনার দাম রেকর্ড ছোঁয়ায় সেই নাকছাবি কেনার লোকও কমছে। নাকছাবিরই যখন এই হাল, তখন বালা, চূড়, হার ইত্যাদি অলঙ্কারের ক্রেতা আরও কমছে।
অনেক ক্ষেত্রে, জেলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা পুঁজি হিসেবে সোনার অলঙ্কার কিনে রাখেন জমানো টাকা দিয়ে। তাঁরাও এখন সোনার দোকানের দিকে যাচ্ছেন না। বেলডাঙা সোনাপট্টির নাকছাবি নিয়ে কাজ করেন অপূর্ব প্রামাণিক। তাঁর কথায়, “সোনার দাম বেড়েছে। ফলে নাকছাবি বিক্রি কমে গিয়েছে। নতুন করে বানানোর প্রশ্নই নেই। ঘরে যে সামগ্রী রয়েছে, তাও বিক্রি হচ্ছে না।”
বেলডাঙা বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সম্পাদক অভিমন্যু কর্মকার বলেন, “এখন বিয়ের ভরা মরসুম। কিন্তু সোনার দাম এতটা বাড়বে কেউ ভাবতে পারেনি। তাই স্বর্ণ শিল্পীরা কারবারে ক্ষতিগ্রস্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy