Advertisement
E-Paper

রক্তদান শিবির ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কংগ্রেসে

রক্তদান শিবির আয়োজনকে কেন্দ্র করে কংগ্রসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিল সাগরদিঘিতে। দলের দুই গোষ্ঠীর এই লড়াইয়ে বিব্রত ব্লক কংগ্রেসের দুই সভাপতিও। দলের কোন্দল থামাতে ব্লক কংগ্রেসের দুই সভাপতিই তাই ঘোষণা করেছেন, “ভবিষ্যতে সাগরদিঘিতে কোনও শাখা সংগঠনের নামে দলের কেউ কোনও কর্মসূচি নিতে পারবেন না। ব্লক কংগ্রেসের ব্যানারেই নিতে হবে যাবতীয় কর্মসূচি।”

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০২:১৩

রক্তদান শিবির আয়োজনকে কেন্দ্র করে কংগ্রসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথা চাড়া দিল সাগরদিঘিতে। দলের দুই গোষ্ঠীর এই লড়াইয়ে বিব্রত ব্লক কংগ্রেসের দুই সভাপতিও। দলের কোন্দল থামাতে ব্লক কংগ্রেসের দুই সভাপতিই তাই ঘোষণা করেছেন, “ভবিষ্যতে সাগরদিঘিতে কোনও শাখা সংগঠনের নামে দলের কেউ কোনও কর্মসূচি নিতে পারবেন না। ব্লক কংগ্রেসের ব্যানারেই নিতে হবে যাবতীয় কর্মসূচি।”

ঠিক হয়েছে সাধারণ মানুষের কাছে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ধারণা ভাঙতে ১৫ অগষ্ট ব্লক কংগ্রেসের উদ্যোগে দলের সবাইকে নিয়েই একটি কর্মসূচি নেওয়া হবে। তাতে দলের সমস্ত স্তরের নেতাকেই হাজির থাকতে বলা হয়েছে।

গত ৮ মার্চ ব্লক এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয় সাগরদিঘি কলেজে। অন্য দিকে, ১৪ মার্চ শনিবার আরও একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় সাগরদিঘির পঞ্চায়েত সমিতির কম্যুনিটি হলে। ৮ মার্চ রক্তদান শিবিরের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিল যুব কংগ্রেস। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল হক বলেন, “সাগরদিঘিতে দলের একটি গোষ্ঠী ইচ্ছে মতো দল চালাচ্ছে। জেলা কংগ্রেসের একটি অংশও তাদের মদত দিচ্ছেন।”

তাঁর দাবি, এর ফলে জনমানসে একটি বিরূপ বার্তা যাচ্ছে। কংগ্রেস বহু কর্মীও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, “যুব কংগ্রেসের নামে এই শিবিরের আয়োজন করেছিলাম। ৭০ জন কর্মী তাতে রক্ত দিয়েছেন।” অন্য দিকে, ১৪ মার্চের রক্তদান শিবিরটি কিষাণ কংগ্রেসের নামে হলেও শিবিরের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন সাগরদিঘির কংগ্রেস নেতা আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, “১৪ মার্চ ওই শিবিরে ২৯১ জন দলীয় কর্মী রক্ত দিয়েছেন। তবে ৮ মার্চ দলের কোনও রক্তদান শিবির হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কারা করেছে, হঠাৎ করে কেনই বা তা করেছে তাও বলতে পারব না।” তাঁর দাবি, “ওই রক্তদান শিবিরের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। সাগরদিঘির বেশির ভাগ কংগ্রেস কর্মীরা আমাদের সঙ্গে আছেন। তাঁরাই রক্ত দিয়েছেন। জেলা নেতারাও এ দিন অনেকেই হাজির ছিলেন।”

এদিকে, দলের ওই কোন্দলে স্বস্তিতে নেই দুই ব্লক কংগ্রেস সভাপতি। এক সভাপতি অলক চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “এ ভাবে দলের মধ্যে আলাদা ভাবে অনুষ্ঠানে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। এটা ঠিক হয়নি।” অন্য সভাপতি নিরঞ্জন সিংহ বলেন, “এতে মানুষ তো ভুল বুঝছেই। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়তে হচ্ছে আমাদেরও। দলের মধ্যে কয়েকজন আছেন এসব করার জন্য। তাঁরা ক্ষতি করছে দলের।”

সাগরদিঘি ব্লককে সাংগঠনিক ভাবে দু’ভাগ করে দু’জন সভাপতি নিয়োগ করেছে কংগ্রেস। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিট পেতেই জেলা নেতাদের সামনে রেখে ওই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শুরু বলে কংগ্রেসের একাংশ সূত্রে খবর। সপ্তাহের মধ্যে দু’দুটি পৃথক রক্তদান শিবির করে একে অন্যের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন থেকে কটূক্তি কোনও কিছুই বাদ থাকছিল না। সাগরদিঘিতে কংগ্রেস এমনিতেই যথেষ্ট দুর্বল।

গত বিধানসভায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট ভেঙে অধীর চৌধুরী নির্দল হিসেবে প্রার্থী দাঁড় করান জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামকে। কংগ্রেসের বিরাট সংখ্যক নেতা ও কর্মীরা তাতে সায় ছিল না। শোচনীয় ভাবে পরাজিত হন তিনি । পরে তাঁরা অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিলেও দলে থেকেও অন্যরাও আর আমিনুলের বিরোধীতার রাস্তা থেকে সরে আসেননি।

সাগরদিঘির কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা জানান, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখেই এখন নানা ব্যানারে কর্মসিূচর বন্যা বইছে দলের মধ্যে। দলে গোষ্ঠী কোন্দলও বাড়ছে। এখন তো একজন আর একজন দলীয় কর্মীর মুখ পর্যন্ত দেখেন না।” অথচ এই মুহূর্তে দলের সামনে একটা সুযোগ ছিলবলে দাবি তাঁর।

তাঁর দাবি, “তৃণমূলের বৃহত্তর অংশ এখন সাগরদিঘিতে দলের বিধায়ক সুব্রত সাহার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। কংগ্রেস নিজেদের গোষ্ঠী বিরোধের জন্য তৃণমূলের এই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগাতে পারছে না।” মমিনুল বাইরে থাকায় ফোন ধরেননি।

কর্মীদের অভিযোগ, প্রার্থী তালিকা ঠিক করেন অধীর চৌধুরী। তাই সকলেই চাইছেন অধীর চৌধুরীর নেকনজরে আসতে। গোষ্ঠী তৈরি করে এইভাবে টিকে থাকতে চাইছেন কিছু নেতা। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অশোক দাস অবশ্য বলেন, “যুব কংগ্রেস ও কিষাণ কংগ্রেস জেলা কংগ্রেসের অনুমতি নিয়েই পৃথক কর্মসূচি নিয়েছে।”

“দলের যে কেউ এ রকম রক্তদান শিবির করলে মানুষই উপকৃত হবে। এর মধ্যে কোনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব খুঁজে দেখা ঠিক নয়। ব্লক কংগ্রেসের সভাপতিরা আছেন। তারাই দলের স্বার্থে যা উপযুক্ত মনে করবেন সেইমত ব্যবস্থা নেবেন”—মন্তব্য তাঁর।

inter clash congress blood donation camp biman hazra biman hajra sagardighi Trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy