Advertisement
E-Paper

কন্যাশ্রীতে কন্যাদের টানতে টোটোয় প্রচার হেডস্যারের

টাকা বাড়িয়েছে সরকার। কোনও স্কুল দেওয়াল লিখে প্রচার চালাচ্ছে। কোথাও হেড দিদিমণি জনে-জনে ফোন করছেন। পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি লোক পাঠাচ্ছেন কেউ। টোটো নিয়ে মাইক হাতে বেরিয়ে পড়েছেন এক হেডস্যার। কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফর্ম জমার শেষ দিন ১৯ জানুয়ারি।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২৬
টোটোয় চেপে প্রচারে প্রধান শিক্ষক। — নিজস্ব চিত্র

টোটোয় চেপে প্রচারে প্রধান শিক্ষক। — নিজস্ব চিত্র

টাকা বাড়িয়েছে সরকার।

কোনও স্কুল দেওয়াল লিখে প্রচার চালাচ্ছে। কোথাও হেড দিদিমণি জনে-জনে ফোন করছেন। পড়ুয়াদের বাড়ি-বাড়ি লোক পাঠাচ্ছেন কেউ। টোটো নিয়ে মাইক হাতে বেরিয়ে পড়েছেন এক হেডস্যার।

কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফর্ম জমার শেষ দিন ১৯ জানুয়ারি। কিন্তু এখনও বহু জনের টনক নড়েনি। বহু ফর্ম জমা পড়া বাকি। ঘুম ছুটেছে শিক্ষকদের।

করিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ফল বেরনোর দিনেই বলে দেওয়া হয়েছিল ফর্ম জমার কথা। প্রায় দেড় হাজার ছাত্রীকে ফোনও করা হয়েছে স্কুল থেকে। প্রধান শিক্ষিকা ইন্দ্রাণী সিকদারের আক্ষেপ, “আমি নিজে এক দিনে ২৪৩টা ফোন করেছি। অনেক ফোন নম্বর বদলে গিয়েছে। অন্যে ধরে অপমান করেছে। তার পরেও এখনও প্রায় ৩০ শতাংশ মেয়ে ফর্ম জমা দেয়নি।”

প্রায় একই অভিজ্ঞতা দেবগ্রাম ডি কে গার্লস হাইস্কুল থেকে শুরু করে ধর্মদা সুশীলাবালা হিন্দু গার্লস হাইস্কুলেরও। ধর্মদা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বীথিকা সিংহ রায় বলেন, “বারবার ফোন করছি, বাড়িতে লোক পাঠাচ্ছি, তবে মেয়েরা ফর্ম জমা দিতে আসছে। দায়টা যেন আমাদেরই!”

হাঁসখালি উলাশি বিএস বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক কুঞ্জবন বিশ্বাস বলেন, “আসলে যে মেয়েরা নিয়মিত স্কুলে আসে না, তারাই ফর্ম জমা দিতে গাফিলতি করে। নানা ভাবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফর্ম ভরতে উৎসাহ দিচ্ছি।” জেলার অন্যতম বড় স্কুল, কৃষ্ণগঞ্জের তারকনগর মা মহারানী হাইস্কুলে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৯৪৭। কিন্তু বড় ক্লাসে ছাত্রীদের উপস্থিতির হার বেশ কিছুটা কম। প্রতিবারই কন্যাশ্রীর ফর্ম পূরণ করতে রীতিমত বেগ পেতে হয় স্কুল কর্তৃপক্ষকে। একেবারে শেষ সময়ে এসে ফর্ম জমা দেয় ছাত্রীরা। এ বারও একই অবস্থা। শেষমেশ মরিয়া হয়ে তারকনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দমোহন মণ্ডল মরিয়া হয়ে নেমেছেন পথে। গত শনিবার তারকনগর স্টেশনের সামনেই মাইক বাঁধা টোটো গাড়ি তৈরি হয়েই ছিল। সাড়ে ১০টা নাগাদ ট্রেন থেকে নেমেই সহশিক্ষক বলরাম সর্দারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি উঠে পড়েন টোটোতে। সুকান্তপল্লি, তারকনগর, গাজনায় ঘুরে-ঘুরে প্রচার করেন।

তাঁর অভিজ্ঞতা, অনেক মেয়েই মনে করে যে এক বার ফর্ম পূরণ করলেই বছর-বছর টাকা মিলবে। নবীকরণের প্রয়োজন নেই। আনন্দমোহন বলেন, “আমরা প্রথম বছর থেকে ছাত্রীদের বলে আসছি যে তাড়াতাড়ি ফর্ম জমা দিতে না পারলে তাদেরই ক্ষতি। তবু এখনও অনেকে ফর্ম জমা দেয়নি। তাই প্রচারে বেরিয়েছিলাম।”

নির্ধারিত দিনের মধ্যে কন্যাশ্রীর ফর্ম ভরানো— এ যেন শিক্ষকদেরই অগ্নিপরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Kanyashree Kanyashree Prakalpa Campaigning for Kanyashree Krishnanagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy