E-Paper

ব্যবসার বাড়বাড়ন্তে পত্তন হয় পালবাড়ির পুজোর

রানাঘাট শহরের বিশ্বাস পাড়ায় প্রাচীন সেই পালবাড়ির অস্তিত্ব জানান দেয় এক টুকরো ইতিহাস। চুন-সুরকির বিবর্ণ দেওয়ালে পুজো এলেই পড়ে চুনকামের প্রলেপ।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৪৩
রানাঘাটের পালবাড়ি (বাঁ দিকে), ঠাকুর দালানে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ (ডান দিকে)।

রানাঘাটের পালবাড়ি (বাঁ দিকে), ঠাকুর দালানে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ (ডান দিকে)। ছবি: সুদেব দাস।

বাংলায় তখন শাসক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। অবিভক্ত বাংলার খুলনা থেকে বাণিজ্যের পথ ধরে রানাঘাট শহরে এসেছিলেন সাগরেশ্বর পাল। ক্রমে ক্রমে ব্যবসার শ্রী বাড়তে থাকে। ব্যবসার বাডবাড়ন্ত দেখে মাতৃ আরাধনার চিন্তা আসে মাথায়। সময়টা ১৭৭৯ সাল। শুরু হল পালবাড়ির দুর্গোৎসব। ২৪৫ বছর পরেও সেই পুজোয় এতটুকু সময়ের ছেঁকা লাগেনি। এখনও যাবতীয় প্রথা মেনে পুজোয় আয়োজন করেন পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যরা।

রানাঘাট শহরের বিশ্বাস পাড়ায় প্রাচীন সেই পালবাড়ির অস্তিত্ব জানান দেয় এক টুকরো ইতিহাস। চুন-সুরকির বিবর্ণ দেওয়ালে পুজো এলেই পড়ে চুনকামের প্রলেপ। নতুন রঙের গন্ধে পুজো যেন প্রাণ ফিরে পায় প্রাচীন এই অট্টালিকা। জীবন্ত হয়ে ওঠে করিন্থিয়ান কায়দায় থাকা ঝুল বারান্দার লোহার গ্রিল। রীতি মেনে আজও ঠাকুর দালানেই প্রতিমা তৈরির কাজ করেন শিল্পী।

পরিবার সূত্রে জানা গেল, প্রথম দিকে তেমন আড়ম্বর না থাকলেও ক্রমে ক্রমে ব্যবসার প্রসার যত বেড়েছে। বেড়েছে বাড়ির আয়তন। তবে তা প্রভাব ফেলেনি পুজোর রীতিতে। শুরুর প্রথম থেকেই এই পুজোয় বলির বিধি থাকলেও সেখানে ব্রাত্য ছিল পশুবলি। নিয়ম মেনে আজও চালকুমড়ো, শশা, আখ বলি দেওয়া হয় পুজোয়। পুজোয় আয়োজন করা হয় কুমারী পুজোর। অষ্টমীর দিন পালবাড়ির কুমারী পুজো দেখতে এখনও ভিড় উপচে পড়ে। নবমীর দিন ঠাকুরদালানের সামনে খোলা চত্বরে কাদা খেলায় মেঠে ওঠেন পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবেশীরাও সেই খেলায় অংশ নেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে রানাঘাট এখনকার মতো এত জনবহুল ছিল না। হাতে গোনা কয়েকটি বাড়িতে সেই সময় পুজো হত। পালবাড়ির এই পুজোয় এলাকার মানুষের ঢল নামতো। পরিবারের সদস্য প্রিয়জিত পাল বলেন, "বিশেষ কোনও মাহাত্ম্য বা স্বপ্নাদেশে এই পুজোয় নেই। তবে যা আছে তা হল ঐতিহ্য ও নিষ্ঠা। যা আজও পরিবারের সকলে মিলে বয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। বিসর্জনের পর কাঠামো জল থেকে তুলে এনে ঠাকুরদালানে রাখা হয়। সেই কাঠামোতেই আগামীর পুজোর মাটি পড়ে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy