Advertisement
E-Paper

‘বিড়ি জ্বালাই লে’... কদর্য ভঙ্গিমার নাচে ডোমকল কলেজের নবীনবরণ

ডোমকল কলেজের নবীনবরণ উৎসব মঞ্চে এমনই একের পর এক নাচ দেখল কলেজে প্রথম পা রাখা ছাত্রছাত্রীরা। শুধু কলেজ প্রাঙ্গণ নয়, সে অনুষ্ঠানের টুকিটাকি-সহ যাবতীয় উদ্দামতা ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়াতেও। যা দেখে, ডোমকল বলছে, ‘‘দেশটারে বিহার কইরা ছাইরল রে, এ চোখে দেখা যায় না!’’ 

নাচে-গানে: ডোমকল কলেজে নবীনবরণ।

নাচে-গানে: ডোমকল কলেজে নবীনবরণ।

সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৩
Share
Save

মঞ্চের গা ঘেঁষে ঢাউস ডিজে বক্স। দেওয়াল কাঁপিয়ে বাজছে— ‘আমার দিকে চাইয়া দেখেন বয়স কত অল্প, রাত যেগে আমরা করব অনেক গল্প’ কখনও ‘বিড়ি জ্বালাই লে’, কর্ডলেস মাইকটা মুখের সঙ্গে সাঁটিয়ে মেয়েটি হাত-পা যথা সম্ভব বাঁকিয়ে-চুরিয়ে গানের সঙ্গে যে নাচ নেচে চলেছেন তার সঙ্গে সঙ্গতের দায় অবশ্য পায়ে তুলে নিয়েছে তামাম পড়ুয়াকুল! সিটি, কদর্য অঙ্গভঙ্গি, অশ্লীল ইঙ্গিত, তাতে বাদ নেই কিছুই।

ডোমকল কলেজের নবীনবরণ উৎসব মঞ্চে এমনই একের পর এক নাচ দেখল কলেজে প্রথম পা রাখা ছাত্রছাত্রীরা। শুধু কলেজ প্রাঙ্গণ নয়, সে অনুষ্ঠানের টুকিটাকি-সহ যাবতীয় উদ্দামতা ছড়িয়ে পড়ল সোশ্যাল মিডিয়াতেও। যা দেখে, ডোমকল বলছে, ‘‘দেশটারে বিহার কইরা ছাইরল রে, এ চোখে দেখা যায় না!’’

শিক্ষাঙ্গন দূরে থাক, পাড়ার ক্লাবের অনুষ্ঠানেও এমন স্বল্প বসনাদের নাচ, আগে দেখেনি ডোমকল। তৃণমূল ছাত্রপরিষদের আয়োজিত সেই নাচের অনুষ্ঠান নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠতেই তাই মুখ লুকোচ্ছে জেলা তৃণমূল। টিএমসিপি’র নেতারাও আড়ালে বলছেন, ‘‘একটু বাড়াবাড়িই হয়ে গেল!’’ যুব তৃণমূল নেতা তথা ডোমকলের পুরপ্রধান সৌমিক হোসেন ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। কলেজের টিএমসিপি ইউনিট সূত্রেই জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানের হোতারা সকলেই তাঁর অনুগামী। সৌমিক তাই আড়াল না করেই জানিয়েছেন, ঘটনাটা তিনি শুনেছেন। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপককে নির্দেশও দিয়েছেন, কারা অনুষ্ঠানের আয়োজক তা জেনে রিপোর্ট দিতে। তিনি বলেন, ‘‘যদি আমাদের সংগঠনের কেউ ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষাঙ্গনে এমন আচরণ মেনে নেওয়া হবে না।’’

মঞ্চের পিছনে ডোমকল কলেজের ঢালাও নামে অবশ্য উদ্যোক্তাদের পরিচয় স্পষ্ট। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক দেবাশিস বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে আমাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে আমাদের ছাত্ররা ওই অনুষ্ঠান করেছে।’’ ঘটনাটি যে ‘আপত্তিজনক’ এবং তাতে যে কলেজের ‘মুখ পুড়েছে’, মেনে নিয়েছেন তা-ও। তাদের উদ্দাম অনুষ্ঠানের জেরে যে ছাত্র সংগঠনের মুখে কালি ছিটেছে তা মেনে নিয়েছেন ডোমকল কলেজের তৃণমূল ছাত্রপরিষদের ইউনিট সভাপতি মানোয়ার হোসেন। আমতা আমতা করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে, অনুষ্ঠান যে এমন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে, বুঝতে পারিনি।’’

অনুষ্ঠানে অবশ্য নিছক কলেজ পড়ুয়ারা নন, ছিলেন জেলার ছাত্র নেতাদের অনেকেই। দেখা গিয়েছে, ডোমকল পুরসভার কয়েক জন কাউন্সিলরকেও। অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভূমিকাতেই দেখা গিয়েছে তাঁদের বলে অভিযোগ। সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘‘ডোমকলের মানুষ হিসেবে আমি লজ্জিত। এ সংস্কৃতি ডোমকলের নয়।’’ নিজস্ব চিত্র

Indecent Dance Domkal College Fresher's Ceremony

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy