Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
TMC

মমতার সভার আগে একতার সুর কমিটিতে

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে পুর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা করে দেওয়া হল যাতে নতুন করে গোষ্ঠীকোন্দল দানা বাঁধতে না পারে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:০৩
Share: Save:

তৃণমূলের জেলা কমিটি ঘোষণার দিন সময় করে জেলা কার্যালয়ে এলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস। মুখোমুখি শুধু নয়, দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে পাশাপাশি বসেও রইলেন বেশ কিছুক্ষণ। এমনকি নিজের পদ ভুলে সৌজন্যতার খাতিরে জেলা কমিটি ঘোষণার সাংবাদিক সম্মেলনে দলের মুখপাত্র কান্দির অপূর্ব সরকারকে সুযোগ করে দিয়ে নিজে চলে গেলেন ঘরের বাইরে। জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা হল কিনা জানতে চাওয়া হলে বৈদ্যনাথ হাসিমুখে জানালেন, “হ্যাঁ কথা হয়েছে।” আর বৈদ্যনাথকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তুলে জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বললেন, “এরা সবাই দল অন্তপ্রাণ। আসন্ন নির্বাচনে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব।”

দিন পাঁচেক আগে অবশ্য শাসক দলের এই দুই নেতাই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। তার সূত্রপাত হয়েছিল বৈদ্যনাথের শুভেন্দু প্রীতি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করায়। আর দলত্যাগী নেতার প্রতি প্রীতির কারণ জানতে জেলা কার্যালয়ে বৈদ্যনাথকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন তাহের। সেই ডাক কাজের অছিলায় এড়িয়ে যাচ্ছিলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি। শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে দলের যে কোন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম ফরাক্কায় বৃহস্পতিবারের প্রকাশ্য সভায়। তৃণমূলের একাংশ কর্মী জুম্মাবারে পরস্পর বিরোধী এই দুই নেতার আমুল বদল, ফিরহাদ হাকিমের সেই কঠোর মনোভাবের ফল বলেই মনে করছেন। তবে আড়াইশো জনের ঘোষিত জেলা কমিটিতে অবশ্য তাঁর নাম খুঁজে পাওয়া যায় নি। সাফাইয়ের সুরে তাহের অবশ্য বলেন, ‘‘সদ্য তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। কিছু ভুল ত্রুটি থেকে গিয়েছে। সংশোধন করে নেওয়া হবে।”

তৃণমূলের অন্দরের খবর, জেলা সভাপতির ডাকে সাড়া না দেওয়ায় দলের নয়া কোর কমিটি শেষমুহুর্তে তাঁর নাম বাদ দিয়ে রাজ্যের সবুজ সঙ্কেত আদায় করেছে তাই এদিন ঘোষিত তালিকায় জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতির নাম দেখতেপাওয়া যায়নি।

তবে জেলা কমিটিতে ৩৮জন সাধারণ সম্পাদকের একজন মোশারফ হোসেন। একই পদে আছেন নওদার বিধায়ক সাহিনা মমতাজ। যাঁরা নওদায় পরস্পর বিরোধী বলেই পরিচিত। আবার মুর্শিদাবাদ বিধানসভার বিধায়ক শাওনি সিংহ রায়ের সঙ্গে একই পদে আছেন মুর্শিদাবাদ পুরসভার প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী ও আজিমগঞ্জ জিয়াগঞ্জ পুরসভার প্রশাসক প্রসেনজিৎ ঘোষও। মুর্শিদাবাদ বিধানসভায় যাঁরা ওই এলাকার বিধায়ক বিরোধীবলেই পরিচিত।

আবার রেজিনগর বিধানসভার বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী পদাধিকার বলে সাধারণ সম্পাদকের পদ পেলেও হুমায়ুন কবিরকে জেলা কমিটির সহ-সভাপতির পদ দিয়ে সংগঠনে দল তাঁর ভূমিকা বাড়িয়েছে বলে রাজনৈতিক মহল দাবি করলেও হুমায়ুন বলেন, “ আমাকে যে দায়িত্বই দেওয়া হবে তাই পালন করবো আন্তরিক ভাবে।”

ঢাকঢোল পিটিয়ে জানানো হয়েছিল শুক্রবার জেলা কমিটি ঘোষণা হবে। আর তা শুনে কেউ বুক বেঁধেছিলেন আশায়, কেউ পছন্দের নেতা পাবেন কিনা সেই উত্তেজনায় দিনভর জেলা কার্যালয়ে হত্যে দিয়ে পড়েছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে পুর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি ঘোষণা করে দেওয়া হল যাতে নতুন করে গোষ্ঠীকোন্দল দানা বাঁধতে না পারে। শুক্রবার তাই জেলা নেতারা বিতর্কিত পদ ঘোষণা না করে কৌশলে তা এড়িয়ে গেলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। দলের জেলা সভাপতি তাহের অবশ্য জানিয়েছে, “শনিবার আর এক দফা কমিটি ঘোষণা হবে।” সেখানে ব্লক কমিটি, শহর কমিটির শূন্যপদ ঘোষণা হওয়ার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mamata banerjee TMC inner conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE