শঙ্কর সিংহ।ফাইল চিত্র।
প্রবীণদের কার্যত ছেঁটে ফেলে একতরফা তৃণমূলের জেলা ও ব্লক কমিটি করার বিরুদ্ধে আগেই সরব হয়েছিলেন বিধায়ক কল্লোল খাঁ। শুক্রবার কর্মিসভায় উপস্থিত জেলা নেতৃত্বের সামনে বিরক্তি উগরে দিলেন মিতবাক বলে পরিচিত বর্ষীয়ান নেতা শঙ্কর সিংহ, যাঁর প্রভাব রানাঘাটের রাজনীতিতে এখনও প্রশ্নাতীত।
শঙ্কর বললেন, কাউকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দল থেকে বার করে দেওয়ার রাজনীতি তিনি সমর্থন করেন না। বললেন, তিনি ‘প্রতিশোধের রাজনীতি’ তিনি কখনও করেননি। বললেন, ব্লক কমিটি গড়ার আগে জেলা নেতৃত্ব আর একটু গভীরে গিয়ে ভাবলে ভাল করতেন।
গত রবিবার তৃণমূলের জেলা ও ব্লক কমিটি ঘোষিত হওয়া ইস্তক বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের আঁচ ধোঁয়াচ্ছে। শুক্রবার ফুলিয়া রঙ্গমঞ্চে রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মী সম্মেলনে দলের বিধায়ক তথা রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি শঙ্কর সিংহ জেলা নেতৃত্বের কাছে শান্তিপুর ব্লক কমিটি নিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদন রাখেন।
এ বার নতুন কমিটি গঠনের সময়ে শান্তিপুর ব্লক ও শহর, তাহেরপুর, বীরনগর শহরের ব্লক সভাপতি পদ থেকে শঙ্কর-ঘনিষ্ঠদের সরানো হয়েছে। শঙ্কর বলেন, “পঞ্চাশ বছর ধরে হরিণঘাটা থেকে করিমপুর পর্যন্ত রাজনীতি করেছি। অনেক নেতা দেখেছি। আমি মর্মাহত।” কার্যত ক্ষোভ গোপন না করেই তিনি বলেন, “সর্বোচ্চ নেতৃত্ব কমিটি করে দিয়েছেন, এটাই শেষ সিদ্ধান্ত। এতে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু যাঁরা করেছেন তাঁরা আরও একটু গভীরে গিয়ে ভেবে করলে পারতেন।”
শান্তিপুর ব্লকের ১০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে চারটি শঙ্করের বিধানসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। সেই শান্তিপুর ব্লকের দলীয় সভাপতি পদ থেকে শঙ্কর-ঘনিষ্ঠ প্রায় বারো বছরের ব্লক সভাপতি তপন সরকারকে সরানো হয়েছে। সদ্য ব্লক সভাপতি হওয়া বর্ষীয়ান নিমাই বিশ্বাসকে উদ্দেশ করে শঙ্কর বলেন, “আপনি আমার থেকে কয়েক বছরের বড়ই হবেন হয়তো বয়সে। কিন্তু এই ১০টা পঞ্চায়েতের দায়ভার কিন্তু আপনার। পরে বলে দেবেন আপনার দায়ভার নেই, যারা করেছে তারা বলবে ‘জানি না’। দিজ ইস নট ফেয়ার। সভাপতিকে বলব শান্তিপুরের সিদ্ধান্তের বিষয় পুনর্বিবেচনা করতে।”
শান্তিপুরের দীর্ঘদিনের নেতা, পুরপ্রশাসক অজয় দে-কেও দিয়ে কার্যত কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে। শান্তিপুর শহরে দল এবং যুব সংগঠনে দাপট অরিন্দম ঘনিষ্ঠদেরই। এ দিন সেই প্রশ্ন তুলে শঙ্কর বলেন, “কাউকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে দল থেকে বার করে দেওয়ার রাজনৈতিক প্রবণতা যদি কারও থাকে, তাকে সমর্থন করি না। আমি প্রতিশোধের রাজনীতি নিয়ে চলিনি।” অজয় দে-র অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ তুলে শঙ্কর বলেন, “অজয় ২৫ বছর পুরপ্রধান, ২৫ বছর বিধায়ক ছিল। হঠাৎ যদি ভেবে নিই ওর কোনও মূল্য নেই, ওর কোনও গুরুত্ব নেই, এই ধরনের রাজনৈতিক বাতাবরণ তৈরি হয়। অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি কেউ তৈরি করে কোনও সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে, তা হলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় শুধু বলেন, “এ রকম কোনও বিষয় আমার জানা নেই। ফলে কোনও মন্তব্য করব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy