উত্তরীয় গলায় কাঞ্চন মৈত্র
রাস্তাটা দেখিয়েছিলেন তিনিই। বহরমপুর শহরে ব্যস্ত চৌমাথা মোহনের মোড়ে ম্যাড়াপ বেঁধে, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে পা বাড়িয়ে মঞ্চ থেকে জানিয়েছিলেন— ‘বদলে যেতে হয়, বদল থেমে থাকে না’।
ফের সেই বদলে গেলেন কাঞ্চান মৈত্র। এ বার বিজেপি। দল বদলে এ দিন তিনি জানিয়ে গেলেন— পঁচিশ বছর ধরে বহরমপুরের মানুষকে শোষণ করা হচ্ছে। তার প্রতিকার করব বলেই দল বদলে এ বার বিজেপিতে এলাম।’’ যা শুনে বহরমপুরের বিদায়ী পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য বলছেন, ‘‘কাঞ্চন প্রথমে মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক করতেন। তার পর সিপিএম-আরএসপি এবং কংগ্রেসে ঘুরে এসেছিলেন তৃণমূলে। এ বার বিজেপি, আর কত বদলাবেন কাঞ্চন!’’
তৃণমূলের অন্দরে বহরমপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সুব্রত ওরফে কাঞ্চনের দল বদল অবশ্য এত সহজ করে দেকা হচ্ছে না। বরং তাঁর ডিগবাজির আড়ালে তালিকা খুঁজছেন তাঁরা!
তৃণমূলের এক তাবড় জেলা নেতা বলছেন, ‘‘কাঞ্চন কিন্তু হাওয়া মোরগ! মনে রাখবেন এত বছর ধরে বহরমপুর পুরসভা কংগ্রেস ধরে রাখার পরে, কাঞ্চনের হাত ধরেই পালা বদলটা ঘটেছিল। ওঁর দেখানো রাস্তাতেই দিন কয়েকের মধ্যে ২০১৭’র ১৮ সেপ্টেম্বর পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য ১৭ জন কাউন্সিলর নিয়ে উল্টে দিয়েছিল বোর্ড।’’
প্রশ্নটা তাই থেকেই যাচ্ছে, এ বার কাঞ্চনের দেকানো পথে ধীরে ধীরে হেঁটে যাবেন দলের অন্য কোন কাউন্সিলর! কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, ‘‘বহরমপুর পুরসভার ২৮ জন বিদায়ী কাউন্সিলেরর মধ্যে তিনিই প্রথম দলত্যাগ করে তৃণমূলে গিয়েছিলেন, এ বার পথিকৃৎ হলেন বিজেপিতে গিয়ে!’’
তবে, সে বারের মতো জাঁক ছিল না এ দিনের দল বদলে। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন শুধু বিজেপি’র রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি দেবজিৎ সরকার। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঞ্চান বরাবরই বহরমপুরের ১৭ বছরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্যের বিরোধী গোষ্ঠী। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঞ্জন জেলা নেতাদের কাছে আব্দার করেছিলেন নীলরতনের পরিবর্তে তাঁকে বহরমপুরের পুরপ্রধান করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। দ্বন্দ্বের শুরু সেখানেই। তার জেরেই কি দলবদল? সে ব্যাপারে কাঞ্চন অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। শুধু প্রচ্ছন্ন তোপ দেগেছেন, ‘‘এ বার পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে সবাইকে জানাব।’’
কিন্তু সে বোর্ডে তো আপনিও ছিলেন কাঞ্চন? নাহ, দল বদলে সে উত্তর আর দেননি তিনি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy