E-Paper

বাবার নামেই ঘর ভাড়া দেশরাজের

গত ২৫ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ায় বাড়িতে ঢুকে বছর উনিশের ঈশিতা মল্লিককে খুন করা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:২৫
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

নিজের সব কিছু খোয়া গিয়েছে জানিয়ে বাবা, বিএসএফের হেড কনস্টেবল রঘুবিন্দরপ্রতাপ সিংহের পরিচয়পত্র কাজে লাগিয়ে অযোধ্যায় হোটেল ভাড়া করেছিল দেশরাজ সিংহ। পুলিশের দাবি, সেই পরিচয়পত্রের ছবি তার বাবাই হোটেল ম্যানেজারের ফোনে পাঠিয়ে দিয়েছিল।ম্যানেজারের অ্যাকাউন্টে ২২ হাজার টাকাও পাঠানো হয়।

কৃষ্ণনগরে জেলা সংশোধনাগারে থাকা দেশরাজকে এখনও টানা জেরা করতে পারেনি পুলিশ।তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য শুক্রবার কৃষ্ণনগর আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। আজ, শনিবার তাকে আদালতে হাজির হাজির করানোর কথা রয়েছে। তার বাবার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে গত শনিবারই রাজস্থানের জয়সলমেরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল কোতোয়ালি থানার একটি দল। কৃষ্ণনগর আদালত ওই পরোয়ানা জারি করার পরেই তাকে গৃহবন্দি করে বিএসএফ। কিন্তু এ দিন পর্যন্ত রঘুবিন্দরকে কৃষ্ণনগরে আনা যায়নি।

গত ২৫ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ায় বাড়িতে ঢুকে বছর উনিশের ঈশিতা মল্লিককে খুন করা হয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই রাতেই হাওড়া থেকে দুন এক্সপ্রেস ধরে উত্তরপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেয় দেশরাজ। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে মাঝপথে বরাকর স্টেশনের কাছে চলন্ত ট্রেন থেকে সে নিজের মোবাইল ফোন ফেলে দিয়েছিল। কোতোয়ালি থানার একটি দল ২৬ অগস্ট গোটা দিন চষে বেড়িয়ে এক যুবকের কাছ থেকে সেটি উদ্ধার করে। কিন্তু তাতে তাদের গোটা একটা দিন নষ্ট হয়ে যায়।

পুলিশ সূত্রের দাবি, হাওড়ায় পৌঁছে দেশরাজ দুন এক্সপ্রেসের অসংরক্ষিত কামরার টিকিট কেটেছিল। কিন্তু ট্রেনে ওঠার আগে সে এক জনের সাক্ষাৎ পায় কাছে লখনউ যাওয়ার বাতানুকূল সংরক্ষিত কামরার টিকিট ছিল এবং কোনও কারণে যাওয়া বাতিল হওয়ায় তিনি তা বিক্রি করে দিতে চাইছিলেন। চারশো টাকা বেশি দিয়ে দেশরাজ টিকিটটা কিনে নেয় এবং বাতানুকূল কামরার বাঙ্কে উঠে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে। তখন তার কাছে আর মাত্র শ’দুয়েক টাকা অবশিষ্ট ছিল।

তদন্তকারীদের দাবি, ২৬ অগস্ট বিকালে অযোধ্যায় ট্রেন থেকে নেমে নবনির্মিত রামমন্দির থেকে শ’দুয়েক মিটার দূরে একটি হোটেলে যায় দেশরাজ। হোটেলের ম্যানেজারকে সে বলে, আধার কার্ড ও যাবতীয় নথিপত্র-সহ তার ব্যাগ চুরি হয়ে গিয়েছে। তাঁরই ফোন থেকে বাবাকে ফোন করে সে টাকা এবং তাঁর পরিচয়পত্রের ছবি চায়। তাঁর নামেই হোটেলে ঘর ভাড়া করা হয়।তাঁর পাঠানো টাকায় হোটেল ভাড়া মেটানো ছাড়াও নতুন মোবাইল কেনে দেশরাজ। তার মামাতো বোন একটি ভুয়ো আধার কার্ডের ছবি তৈরি করে সেই মোবাইলেই পাঠিয়ে দেয়।

পরের দিন দুপুর ১২টা নাগাদ হোটেল ছেড়ে দেশরাজ নেপালগামী বাস ধরে। তার বাবার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তার ঘণ্টাখানেক বাদে পুলিশ সেই হোটেলে পৌঁছয়। মাঝপথে বাস থেকে নতুন মোবাইলটিও ফেলে দেয় দেশরাজ। তবে শেষরক্ষা হয়নি। অযোধ্যা থেকে বাসে মহারাজগঞ্জে গিয়ে হোটেলে উঠেছিল দেশরাজ। সেখান থেকে নেপাল সীমান্ত ঘেঁষা বরিয়া গ্রামে চলে যায়। কিন্তু ৩১ অগস্ট নেপালে ঢোকার আগে সে ধরা পড়ে যায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Krishnanagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy