অপেক্ষাই সার। নিজস্ব চিত্র
দীপক অধিকারী। তিনি দেব। তিনি ‘পাগলু’। তিনিই ‘স্টার’! তিনি আবার মেদিনীপুরের ঘাটাল কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী এবং রাজ্যের অন্য অনেক লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ‘তারকা প্রচারক।’
কিন্তু যত গোলমাল বার বার সেই তারকার প্রচার নিয়েই। গত কয়েক দিনে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের একাধিক সভা ও রোড শোয়ে তিনি আসব বলেও আসতে পারেননি বা এত দেরি করে এসেছেন যে জনতা অপেক্ষায় ও গরমে তিতিবিরক্ত হয়ে ফিরে গিয়েছে। কোথাও তাঁর দেরির কারণ হেলিকপ্টার নামার অনুমতি না-পাওয়া, কোথাও সময় ভুল করা, কোথাও সভাস্থল খুঁজে না-পাওয়া আবার কোথাও হঠাৎ করে অন্য সভার ডাক এসে যাওয়া।
নদিয়ায় সম্প্রতি দু’বার এমন ঘটল। গত ২৫ এপ্রিল শান্তিপুর, চাকদহ ও বেতাইয়ে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত অনেক দেরিতে শান্তিপুর ও বেতাইয়ে তিনি বুড়ি ছোঁয়ার মতো করে যেতে পেরেছেন। কিন্তু হতাশ হতে হয়েছে চাকদহকে। সেখানে আর পৌঁছতেই পারেননি নেতা-অভিনেতা। হেলিপ্যাডে তাঁর হেলিকপ্টার নামার অনুমতি না-পাওয়াতেই সমস্যা তৈরি হয় বলে তৃণমূল ও প্রশাসন সূত্রের খবর।
ঠিক তার দু’দিনের মাথায় শনিবার ফের নায়কের জন্য অপেক্ষাই সার হল নদিয়ার শিমুরালির মানুষের। বৈশাখের খর রোদে হাঁ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে গলদঘর্ম হয়ে তাঁদের ফিরে আসতে হল। ঘোষণা সত্ত্বেও দেব এলেন না। কেন তিনি এদিন এলেন না? এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী এবং স্থানীয় বিধায়ক রত্না ঘোষ কর বলেন, “দেব নিজেও ঘাটালের প্রার্থী। সেখানে হঠাৎ তাঁর কাজ পড়ে যাওয়ায় এ দিন আসতে পারেনি।” দলীয় কর্মীদের একাংশ কিন্তু বিষয়টা ভাল ভাবে দেখছেন না। তাঁরা মনে করছেন, মানুষের এই হেনস্থা, বিরক্তি ও আশাভঙ্গের প্রভাব ইভিএমে না পড়ে। কারণ, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রী বিশেষ করে দেবের মতো তারকাদের সামনাসামনি দেখা পাওয়াটা বিরাট ব্যাপার। মানুষের কাছে তার অন্য রকম মূল্য। বিরোধীরা অবশ্য সুযোগ পেয়ে কটাক্ষ করেছেন, ‘‘দেব দর্শন কি অতই সোজা?’’
গত সপ্তাহে মুর্শিদাবাদেও একই ঘটনা ঘটেছে। ১৮ এপ্রিল নওদাতে ভোট প্রচারে আসার কথা ছিল নায়কের। পৌঁছেছেন সাড়ে চার ঘণ্টা দেরিতে। ঝাঁঝিয়ে উঠেছে অপেক্ষমান মানুষ—‘‘স্নান-খাওয়া না সেরে সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি। মোবাইলের চার্জও ফুরিয়ে গেল। বাচ্চাগুলো কেঁদে ঘুমিয়ে পড়ল। সত্যিই দেব আসবে তো?’’ শেষে মঞ্চে উঠে দেব অবশ্য করজোড়ে বলেন, ‘‘দেরির জন্য খুব দুঃখিত।’’ ২১ এপ্রিল তাঁর যাওয়ার কথা ছিল লালগোলা ও রানিনগরে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ দেখিয়ে সেখানেও যাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy