Advertisement
E-Paper

মাদ্রাসায় ফল খারাপ ছাত্রীদের, উঠছে প্রশ্ন

গত কয়েক বছর ধরে বেশি সংখ্যক ছাত্রী হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় বসছে। অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেয়েদের বিদ্যালয়মুখী হওয়ার এই প্রবণতা আশার আলো দেখিয়েছিল

মনিরুল শেখ

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৭ ০২:১৯
ফল: পাশ করেছি তো? চলছে তালিকায় নিজের নাম খোঁজা। —নিজস্ব চিত্র।

ফল: পাশ করেছি তো? চলছে তালিকায় নিজের নাম খোঁজা। —নিজস্ব চিত্র।

গত কয়েক বছর ধরে বেশি সংখ্যক ছাত্রী হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় বসছে। অর্থনৈতিক ভাবে অনগ্রসর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেয়েদের বিদ্যালয়মুখী হওয়ার এই প্রবণতা আশার আলো দেখিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাজ্যের প্রায় ছ’শো হাই মাদ্রাসার ফল প্রকাশের পর সেই আলো যেন অনেকটাই মলিন হয়ে গিয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, পরীক্ষায় বসলেও পাশের হারের নিরিখে অনেকেই পিছিয়ে। রাজ্য মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের পূর্বতন সচিব সৈয়দ নুরুস সালাম বলছেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই এটা যেন ভবিতব্য হয়ে উঠেছে। বেশি সংখ্যক মেয়ে স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু তারা ভাল ফল করছে না। এর মূলে রয়েছে পরিবারে মেয়েদের প্রতি অবহেলা।’’

মুর্শিদাবাদে চলতি বছরে প্রায় ১২ হাজার পড়ুয়া হাই মাদ্রাসার পরীক্ষায় বসেছিল। তার মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ছিল হাজার সাতেক। একই ভাবে নদিয়ার হাজার দেড়েক পড়ুয়ার মধ্যে সিংহভাগই ছিল ছাত্রী। কিন্তু এ দিনের ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, পাশের হারের নিরিখে ছাত্রদের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে ছাত্রীরা। মুর্শিদাবাদে ছাত্রদের পাশের হার ৮০.৭৩%। কিন্তু ছাত্রীদের ক্ষেত্রে প্রায় ৬৮ শতাংশ। ফলে সার্বিক ভাবে পাশের হার কমেছে। সার্বিক ভাবে হাই মাদ্রাসায় পাশের হার ৭২.৩২%। অথচ গত বছরও এর হারটা ছিল ৭৭। মুর্শিদাবাদের বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী বিশ্বাস দে এই প্রবণতা সম্পর্কে বলছেন, ‘‘ছাত্রীদের খারাপ ফলে আমি আশাহত। মাদ্রাসাগুলির ফলাফল সংক্রান্ত নথিপত্র চেয়েছি। ছাত্রীরা কেন পিছিয়ে পড়ল, তা বিশ্লেষণ করে দেখব।’’

নদিয়াতে ছাত্রদের পাশের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ। কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে তা মাত্র ৬৪ শতাংশ। চাপড়ার একটি হাই মাদ্রাসার ইংরেজির শিক্ষক আবুল হোসেন বিশ্বাস জানাচ্ছেন, আসলে অনেক সময় বাবা-মা মেয়েদের পড়াশোনার দিকে সে ভাবে নজর দেন না। তাদের স্কুলেই পাঠিয়েই দায়িত্ব সারেন। এই প্রবণতার পরিণতিতেই মেয়েদের এই খারাপ ফল। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে‌র গবেষক শেখ আব্দুল মাতিনও বলছেন, ‘‘গবেষণার কাজে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঘুরেছি। অভিভাবকেরা ভাবেন, যতদিন বিয়ে না হচ্ছে মেয়েরা স্কুলে যাক। এতে কন্যাশ্রীর টাকাও মিলবে। কিন্তু মেয়েদের পড়াশোনার দিকে নজর দেন না বাবা-মায়েরা। যার ফলে পরীক্ষায় ছাত্রীদের এই অবনমন।’’

(সহ প্রতিবেদন: শুভাশিস সৈয়দ)

Madrasa Students result
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy