Advertisement
E-Paper

‘নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে’ ঝাঁপ! অ্যাম্বুল্যান্স না-পাওয়ার দায় স্বীকার করেও জানাল ম্যাকাউট

মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার প্রেক্ষিতে সমস্ত পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভরতদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:০৩
MAKAUT

হরিণঘাটার ম্যাকাউট ক্যাম্পাসে (বাঁ দিকে) সোমবার সন্ধ্যায় মেলে সায়নী সেন (ডান দিকে) নামে ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ার পরে পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দেন এমটেক ছাত্রী। তাঁর মানসিক চিকিৎসাও চলছিল। সোমবার মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ম্যাকাউট)-এ ছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনার প্রেক্ষিতে এমনই জানালেন কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সমস্ত পরীক্ষা ছিল, সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

এমটেকের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সায়নী সেনের মৃত্যুর পর সোমবার বিকেল থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার সকালেও অচলাবস্থা নদিয়ার হরিণঘাটার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনা নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তী উপাচার্য তাপস চক্রবর্তীও। তিনি জানান, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বিচার করে দেখা হবে। প্রয়োজনে আগামী বুধবার যে সমস্ত পরীক্ষা রয়েছে, সেগুলোও আপাতত মুলতুবি রাখা হতে পারে।

এমটেক দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষায় বসেছিলেন সায়নী। মাইক্রো-ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ওই ছাত্রীর বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে। তাঁর সহপাঠীদের অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন এক শিক্ষক সায়নীকে ‘হেনস্থা’ করেছিলেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে বেশ খানিক ক্ষণ সায়নীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ের পিছনে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিক্ষোভ শুরু করেন ম্যাকাউটের পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষকের হেনস্থায় অপমানিত হয়েই আত্মহত্যা করেছেন এমটেক ছাত্রী। তা ছাড়া সায়নী পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দেওয়ার পরে প্রায় ৪০ মিনিট বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পড়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স থাকা সত্ত্বেও ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি। পরে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা সায়নীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কী ভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে পাঁচতলা থেকে ছাত্রীটি ঝাঁপ দিলেন, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

সোমবার রাতভর ছাত্রবিক্ষোভের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ ছিল। মঙ্গলবারও একই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় মঙ্গলবার পরীক্ষা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি, ছাত্রীমৃত্যুর ঘটনায় কর্তৃপক্ষের সাফাই, সায়নীর ‘মানসিক স্থিতি’ ঠিক ছিল না। বেশ কয়েক দিন ধরে তাঁর কাউন্সেলিং চলছিল। তার পর সোমবার পরীক্ষার সময় তিনি নকল করতে গিয়ে ধরা পড়েন। তখন পরীক্ষক তাঁর খাতা কেড়ে নিয়েছিলেন। ১৫ মিনিট পর আবার খাতা দিয়েও দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষার পরে ওই ছাত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্তর্বর্তী উপাচার্য তাপস বলেন, ‘‘আমরা বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলে ওই ছাত্রীর বিষয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। কিন্তু ওই সময় অ্যাম্বুল্যান্সের চালকেরা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে উপস্থিত ছিলেন না। তাই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।’’ অন্তর্বর্তী উপাচার্য মেনে নিয়েছেন, এই জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতি রয়েছে। তাঁর সংযোজন, ‘‘নিচু তলার কর্মীদের উপর তো নিয়ন্ত্রণ থাকে না কর্তৃপক্ষের।’’

ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছেন রেজিস্ট্রার এবং অন্তর্বর্তী উপাচার্য। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, সায়নীর মৃত্যুর দায় নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়কেই।

MAKAUT Student Death Suicide university haringhata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy