Advertisement
১৬ মে ২০২৪

ছেলের মুখটাই ভুলে গিয়েছি

নিয়মের ফাঁসে গ্রামের বাড়িতে আর ফেরা হয়নি তার। খোঁজ পেয়ে তার বাবা বছর খানেক ধরে আর্জি জানিয়ে আসছেন, ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু নিয়মের দরজায় সে আর্জি ক্রমাগত মাথা কুটে মরছে। নাকাশিপাড়ার ওই হোমের কর্তা মোসলেম মুন্সি বলছেন, “মামুন সুস্থ হওয়ার পর ওকে বাংলাদেশে ফেরানোর জন্য আমিও প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরেছি।

মামুন রসিদ

মামুন রসিদ

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
নাকাশিপাড়া শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share: Save:

স্থানীয় মহকুমাশাসকের কাছে ছোট্ট একটা চিঠি লিখেছেন বাবা— কত দিন ছেলেটার মুখ দেখিনি। মুখটাই ভুলে গিয়েছি ওর। কাছে হাত জোড় করছি, ছেলেটাকে দেশে ফিরিয়ে দিন না!

বাংলাদেশের রাজশাহি থেকে চিঠি লিখেছেন আব্দুল করিম। তাঁর বছর কুড়ির ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। সীমান্তের রাঙা চোখ সে ঠাওর করবে কী করে! বছর দেড়েক আগে, একা একাই মামুন রসিদ তাই পা রেখেছিল এ দেশের গ্রামে। সীমান্তরক্ষীর হাত ঘুরে তার পর থেকেই তার ঠিকানা বেসরকারি এক ভবঘুরে হোমে।

তবে, এ ক’দিনে চিকিৎসায় বেশ সুস্থ হয়ে উঠেছে মামুন। কিন্তু, নিয়মের ফাঁসে গ্রামের বাড়িতে আর ফেরা হয়নি তার। খোঁজ পেয়ে তার বাবা বছর খানেক ধরে আর্জি জানিয়ে আসছেন, ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার। কিন্তু নিয়মের দরজায় সে আর্জি ক্রমাগত মাথা কুটে মরছে। নাকাশিপাড়ার ওই হোমের কর্তা মোসলেম মুন্সি বলছেন, “মামুন সুস্থ হওয়ার পর ওকে বাংলাদেশে ফেরানোর জন্য আমিও প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরেছি। সাড়া পাইনি।’’ এ বার তাই দিন্নির স্বরাষ্ট্র দফতরে তদ্বির শুরু করেছেন তিনি।

নদিয়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ২০১৫ সালে চাপড়া সুটিয়া এলাকায় ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে ঘুরে বেড়াতে দেখে ছেলেটিকে আটক করে বিএসএফ। থানা থেকে তাকে পাঠানো হয় নাকাশিপাড়ার গলায়দড়িপাড়ার ওই হোমে। সেই থেকে হোমই তার ঠিকানা।

মহকুমাশাসক থেকে প্রশাসনের তাবড় কর্তা তদ্বিরের শেষ রাখেননি করিম। কিন্তু লাল ফিতের ফাঁস কাটেনি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলছেন, “দেশে ফেরানোর বিষয়ে এসপি ও স্বরাষ্ট্র দফতরকে চিঠি দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE