Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
DhulIan

৮ শতক জমির মূল্য গুলি-খুন

জঙ্গিপুরের এসপি ওয়াই রঘুবংশী জানিয়েছেন, পুলিশ টহলদারি চালাচ্ছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে কয়েক জনকে। পাশাপাশি তদন্ত শুরু হয়েছে।

আহত: সেলিম আনসারি(ডানদিকে)বিক্ষোভ: থানার সামনে অবস্থানে বিধায়ক(বা‌ঁদিকে)। নিজস্ব চিত্র।

আহত: সেলিম আনসারি(ডানদিকে)বিক্ষোভ: থানার সামনে অবস্থানে বিধায়ক(বা‌ঁদিকে)। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২০ ০১:০১
Share: Save:

আট শতক জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই চলছিল বিবাদ। আর সেই জমি বিবাদের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ান পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের শমসেরগঞ্জ ফিল্ড পাড়া। চলল গুলি, ও বোমাবাজি সঙ্গে ইট পাটকেল। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ইমরান আলি (৫৪) নামে এক ব্যক্তির। তিনি ওই জমির মালিকদের অন্যতম বলে দাবি। গুরুতর জখম হয়েছেন সেলিম আনসারি ও মহম্মদ মোবাস্সর শেখ। মোবাসসর ইমরানের ছেলে, সেলিম ইমরানের ভাইপো। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জমিটি নিয়ে দীর্ঘ কাল ধরেই বিবাদ ছিল। তা আদালতেও গড়িয়েছে। এ দিন সংঘর্ষের পরে পুলিশ সন্ধে পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় লেগেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রংও।

মোবাসসরের অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে রয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্য তথা স্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূল নেতা আনারুল হকের ভাই। মোবাসসর বলেন, ‘‘আজ যারা হামলা চালায়, তাদের মধ্যে আনারুলের ভাই ছিলেন।’’ আনারুল হক সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন ‘‘আমরা জমি মাফিয়াদের কাজের বিরোধিতা করি। এলাকা যেন শান্ত থাকে তার

চেষ্টা করি।’’ তবে শমসেরগঞ্জের তৃণমুলের বিধায়ক আমিরুল ইসলামও অভিযোগ করেছেন আনারুলের ভাইয়ের প্রতি। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশ এই ঘটনায় নির্দোষদের গ্রেফতার করেছে। আসল দোষী আনারুল হকের ভাই। তাকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? স্থানীয় থানার ওসি-র বদলি চাই।’’ আমিরুল এই দাবিতে থানার সামনে বিক্ষোভ অবস্থানও করেন।

আনারুল অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘কিছু দুষ্কৃতী এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের পুলিশ গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’

এবিষয়ে জঙ্গিপুরের এসপি ওয়াই রঘুবংশী জানিয়েছেন, পুলিশ টহলদারি চালাচ্ছে। গ্রেফতারও করা হয়েছে কয়েক জনকে। পাশাপাশি তদন্ত শুরু হয়েছে।

পুলি‌শ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শমসেরগঞ্জ থানার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের শমসেরগঞ্জ ফিল্ড পাড়ায় আট শতক জমি নিয়ে বিবাদ অনেক দিনের। মোবাসসের দাবি, ‘‘এই জমি আমাদেরই। আমরা আদালত থেকে সেই মামলায় জিতেও এসেছি।’’ তাঁর দাবি, তার পর থেকেই প্রতিবেশীদের কয়েক জন গায়ের জোরে জমি দখল করার চেষ্টা শুরু করেন। বুধবার সকালে এক প্রতিবেশী জাকির শেখ হঠাৎই ওই জমিতে জোর করে পাঁচিল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাতে বাধা দিতে যান ইমরান ও তার পরিবার। বিবাদ চলাকালীন প্রথমে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়, পরে বোমা ফাটানো হয় বলে জানায় ইমরানের পরিবার। চলে পাঁচ রাউন্ড গুলিও। গুলিবিদ্ধ হন ইমরান সহ তিন জন। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রাই তাঁদের প্রথমে অনুপনগর হাসপাতালে নিয়ে যায় । পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। জঙ্গিপুর নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় ইমরানের। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্তরা। জাকিরকে ফোনে পাওয়া যায়নি। মেসেজের উত্তর দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dhulian shot dead Land tussle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE