Advertisement
E-Paper

সন্তান দিয়েও ফিরিয়ে নিতে হল দম্পতিকে

হাঁসখালির গাজনার ঘটনা। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এলাকার ত্রিদিব মিত্রের দুই মেয়ে, তিন ছেলে। টানাটানির সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে সে মা-ও হয়েছে। আড়াই মাস আগে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের ষষ্ঠ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪০
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

ইতিমধ্যেই তাঁদের পাঁচটি সন্তান আছে। সদ্য মা হয়েছে বড় মেয়ে। এই অবস্থায় সদ্যোজাত ছেলেকে নিজেদের কাছে রাখতে চাইছিলেন না তাঁরা। এক নিঃসন্তান আত্মীয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, কোনও আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে না গিয়েই। খবর চলে যায় হাঁসখালি থনার পুলিশের কাছে। তারা গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিল বাবা-মায়ের কাছেই।

হাঁসখালির গাজনার ঘটনা। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, এলাকার ত্রিদিব মিত্রের দুই মেয়ে, তিন ছেলে। টানাটানির সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে, মাস ছয়েক আগে সে মা-ও হয়েছে। আড়াই মাস আগে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের ষষ্ঠ সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই তাঁরা ঠিক করে নিয়েছিলেন, এই সন্তানকে নিজেদের কাছে রাখবেন না। সেই মতো কথা বলেন গ্রামেরই বাসিন্দা, নিঃসন্তান সত্যজিৎ বিশ্বাসের সঙ্গে। ঠিক হয়, সত্যজিৎই তাকে নিজের সন্তানের মতো মানুষ করবেন। গত রবিবার তাঁর হাতে শিশুটিকে তুলে দেন বাবা-মা। বিষয়টি জানাজানি হলেও এর মধ্যে টাকাকড়ির লেনদেন না থাকায় গাঁয়ের লোকেও বিশেষ মাথা ঘামাননি।

কিন্তু বুধবার সকালে পুলিশের কাছে খবর আসে। তারা গিয়ে ওই শিশু, সত্যজিৎ ও তাঁর স্ত্রীকে থানায় নিয়ে আসে। সেই সঙ্গে আনা হয় গ্রামের আশাকর্মী শিখা বিশ্বাসকেও। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, শিশুটির হাত বদলে জড়িত ছিলেন এই আশাকর্মী। তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে থানায় আনা হয় ত্রিদিব ও তাঁর স্ত্রীকেও। শিশুটিকে তাঁদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, যদি শিশুটিকে যদি তাঁরা নিজেদের কাছে রাখতে না চান, চাউল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আইন মেনে তাকে হস্তান্তর করতে হবে।

ত্রিদিব বলছেন, “চার ছেলেমেয়ে আছে ঘরে। ঠিক মতো খাওয়া-পরাতে পারি না। তাই ভেবেছিলাম, আত্মীয়ের কাছেই মানুষ হোক।” তিনি জানান, তাঁর স্ত্রী যখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা, তাঁরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে গর্ভ নষ্ট করতে চেয়েছিলেন। চিকিৎসক বলেন, এই অবস্থায় গর্ভ নষ্ট করা যাবে না। ‘‘তখনই আমরা সিদ্ধান্ত নিই, বাচ্চা জন্মালে অন্যের সংসারে দিয়ে দেব।”

তারা না হয় জানতেন না যে এ ভাবে শিশু হাতবদল করা যায় না। তার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মকানুন আছে। কিন্তু আশাকর্মী তো তা জানতেন? তা হলে কেন তিনি বিষয়টা হতে দিলেন? মহিলার জবাব, “খাওয়াতে-পরাতে পারবে না ভেবে ওরা টাকাপয়সা না নিয়ে স্বেচ্ছায় আত্মীয়কে সন্তান দিয়েছিল। তাই কিছু বলিনি।” পুলিশ জানায়, খারাপ অভিসন্ধি না থাকায় কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হয়নি।

Child Donation Boy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy