E-Paper

অপমৃত্যু, জনরোষ সামলাতে পুলিশের লাঠিপেটা

কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্কুটারে লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কৃষ্ণনগরের এ ভি স্কুল এলাকার বাসিন্দা নিলুফা খাতুনের (১২)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৩২
পুলিশর মারে জখম। কৃষ্ণনগর।

পুলিশর মারে জখম। কৃষ্ণনগর। নিজস্ব চিত্র।

লরি চাপা পড়ে বালিকার মৃত্যুর জেরে এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কৃ়ষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড। সোমবার রাতে চোখের সামনে শিশুটির থেঁতলানো মৃতদেহ দেখে এলাকার মানুষ উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। ট্র্যাফিক স্ট্যান্ড ও পাশের পুলিশ লাইনের ফটেকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষেভ দেখাতে থাকেন তাঁরা।

প্রত্য়ক্ষদর্শীদের অভিযোগ, সেই সময় পুলিশ লাইন থেকে প্রচুর পুলিশ বেরিয়ে এসে এলোপাথাড়ি লাঠি চালাতে থাকে। সাধারণ পথচলতি মানুষজন থেকে শুরু করে দোকানি, এমনকি সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপরেও লাঠি চালায় পুলিশ। লাঠির বাড়ি মেরে স্থানীয় এক মিষ্টির দোকানির মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর মাথার আঘাত গুরুতর বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ। কৃষ্ণনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্কুটারে লরির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কৃষ্ণনগরের এ ভি স্কুল এলাকার বাসিন্দা নিলুফা খাতুনের (১২)। তার মামা আশঙ্কাজনক অবস্থায় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ লরিটিকে আটক করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মেয়েটি তার মামার স্কুটারে চড়ে যাচ্ছিল। বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে ট্র্যাফিক স্ট্যান্ডের সামনেই একটি লরি তাদের ধাক্কা দেয়। দু’জনে ছিটকে পড়লে লরির চাকা বালিকাটিকে পিষে দেয়। সেই দৃশ্য দেখে এলাকার দোকানদারেরা থেকে শুরু করে বাসকর্মী, পথচলতি মানুষজন হতচকিত হয়ে যান। এর পর দীর্ঘক্ষণ থেঁতলানো মৃতদেহ রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেই জনতা উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ট্র্যাফিক স্ট্যান্ডে ভাঙচুর চালানো হয়। এর পর পাশে পুলিশ লাইনের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়।

এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন ছিল, ট্র্যাফিক পুলিশের সামনেই কী ভাবে একটা লরি এ রকম বেপরোয়া ভাবে কাউকে পিযে দিতে পারে? স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকের মতোই সুখেন ঘোষ অভিযোগ করেন, “এখানে ট্র্যাফিক পুলিশ কোনও কাজই করে না। ওদের কাজ শুধু তোলা আদায় করে। ওরা যদি নিজেদের ডিউটি করত তা হলে মেয়েটাকে এ ভাবে মরতে হত না।” একই অভিযোগ করেন স্থানীয় হোটেল মালিক কাকলি সেনও। তাঁর কথায়, “আমার চোখের সামনে ঘটনাটা ঘটল। লরিটা কোনও কারণে দ্রুত যেতে গিয়েই ধাক্কা মারে। শুনছি, ট্র্যাফিক পুলিশ টাকা তুলছিল। টাকা দেবে না বলে দ্রুত পালাতে গিয়েই লরিটা দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। দিনের পর দিন চোখের সামনে একই ঘটনা ঘটতে দেখছি।”

জনতাকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে শান্ত করার বদলে পুলিশ উল্টে মারমুখী হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ। পুলিশ লাইনের সামনে জড়ো হওয়া জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে তারা নির্বিচারে লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। কাকলির অভিযোগ, “সামান্য কারণে পুলিশ যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই লাঠিপেটা করেছে। পথচলতি নিরীহ মানুষজনও ছাড় পায়নি। মিষ্টির দোকানের ভিতরে ঢুকে লাঠির বাড়ি মেরে মালিক সুমন সাহার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে।”

রাতে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে অবশ্য দাবি করেন, “পুলিশের উপর চড়াও হয়ে লোকজন ইট মারতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং রাস্তা ফাঁকা করতে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Krishnanagar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy