আইনজীবীরই বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনালেন এক আইনজাবী। পাল্টা মারধর, মানহানির মামলা ঠুকেছেন অভিযুক্ত আইনজীবী। রানাঘাট মহকুমা আদালতের ঘটনা। দু’জনই গত ১৪ অক্টোবর রানাঘাট থানায় একে অপরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ দু’টি মামলাই শুরু করেছে।
ওই মহিলা আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁর বার অ্যাসোশিয়েশনের হলে বসা এক মহিলা মক্কেলকে উত্ত্যক্ত করছিল অভিযুক্ত আইনজীবী। ঘটনার প্রতিবাদ করলে পল্লব মণ্ডল নামে ওই আইনজীবী তাঁকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন। ঘটনা এত দূর গড়ায় যে, তাঁকে চিকিৎসকের দ্বারস্থ পর্যন্ত হতে হয়। তিনি রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে এবং শান্তিপুরের ফুলিয়াতে চিকিৎসা করান। অসুস্থ হওয়ায় অভিযোগ জানাতে দেরি হয়েছে বলে তিনি অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন। অন্য দিকে, একই দিনেই পল্লববাবুও রানাঘাট থানায় ওই মহিলা আইনজীবীর বিরুদ্ধে মারধর, মানহানির অভিযোগ দায়ের করেছেন। দুই আইনজীবীর মামলা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
ওই মহিলা আইনজীবী জানান, ২০১১ সাল থেকে তিনি রানাঘাট মহকুমা আদালতে ওকালতি করছেন। তাঁর প্রসার বাড়তে দেখে পল্লববাবু-সহ ওই আদালতের বেশ কিছু আইনজীবী নাকি তাঁকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করছিল। তাঁর দাবি, এর আগেও পল্লববাবু তাঁকে উত্ত্যক্ত করেন। গত ৬ অক্টোবর তাঁর এক মহিলা মক্কেল বার অ্যাসোসিয়েশনের ভেতরে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ওই সময় পল্লববাবু তাঁকে উত্ত্যক্ত করেন। তিনি এর প্রতিবাদ করলে পল্লববাবু তাঁর সম্পর্কে কটু মন্তব্য করেন। তিনি বিষয়টি রানাঘাটের এসিজেএমকে মৌখিক ভাবে জানান। এসিজেএমকে জানিয়ে তিনি ফিরতেই পল্লববাবুর তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। মারধর করে শ্লীলতাহানিও করেন।
যদিও পল্লববাবু তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, ‘নিয়ম’ রয়েছে অ্যাসোসিয়শনের হলের ভেতরে আইনজীবীর উপস্থিতিতে তাঁর মক্কেল বসে আলোচনা করতে পারেন। কিন্তু শুধু মক্কেল গ্রন্থাগারের ভেতরে বসে থাকতে পারেন না। ঘটনার দিন বারের ভেতরে দু’জন মক্কেল ফ্যান বসেছিলেন। তাই তাঁদের বাইরে যেতে বলেছিলেন। পরে তা জানতে পেরে ওই মহিলা আইনজীবী তাঁর উপরে চড়াও হন। চ়ড়-থাপ্পড় মারার পাশাপাশি জামার কলার ধরে টানাটানি করেন। সহকর্মীরা এসে তাঁকে ছাড়ান। তার পরে তিনি ওই মহিলা আইনজীবীর বিরুদ্ধে মারধর ও মানহানির অভিযোগ আনেন।
কি বলছে বার অ্যাসোসিয়েশন?
অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মিলন সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি ফোনে জানতে পেরে ছুটে আসি। ওই মহিলা আইনজীবী যে অন্যায় ভাবে পল্লববাবুকে আক্রমণ করেছেন তা অন্যদের থেকে জানতে পারি।’’ তিনি জানান, এর পরে ওই মহিলা আইনজীবীকে পল্লববাবুর কাছে ক্ষমা চাইতে বলি। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। বারের প্রায় ৫০ জন সদস্য ওই মহিলা আইনজীবীকে বার থেকে বহিষ্কার করার জন্য মিলনবাবুর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। বারের পক্ষ থেকে ওই মহিলা আইনজাবীকে শোকজ করা হয়েছে। ২৫ অক্টোবরের মধ্যে শোকজের উত্তর দিতে বললেও কোনও উত্তর মেলেনি। যদিও ওই মহিলা আইনজীবীর দাবি, এখনও শোকজের চিঠি হাতে পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy