Advertisement
E-Paper

মদ্যপ ছেলের কিল-ঘুষিতে মৃত্যু মায়ের

রোজকারের মতো রবিবার সন্ধ্যাতেও মদ খেয়ে তাণ্ডব শুরু করেছিল সুশান্ত রাজমল্ল। বউ, দিদি, ভাগ্নি—একে একে সকলের উপরেই চোটপাট শুরু করে সে। শেষমেশ ছেলের তাণ্ডব থামাতে যান বছর পঞ্চাশের নন্দরানি রাজমল্ল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৫৫
ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন কানাই রাজমল্ল।— নিজস্ব চিত্র

ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন কানাই রাজমল্ল।— নিজস্ব চিত্র

রোজকারের মতো রবিবার সন্ধ্যাতেও মদ খেয়ে তাণ্ডব শুরু করেছিল সুশান্ত রাজমল্ল। বউ, দিদি, ভাগ্নি—একে একে সকলের উপরেই চোটপাট শুরু করে সে। শেষমেশ ছেলের তাণ্ডব থামাতে যান বছর পঞ্চাশের নন্দরানি রাজমল্ল। তিনি হাত ধরে ছেলেকে ঘরের বাইরেও বার করে দেন। তার পরই সুশান্ত সকলকে ছেড়ে মায়ের উপর চড়াও হয়। মাকে কিল-ঘুষি-চড় মারতে থাকে সে। এতেই ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান নন্দরানিদেবী।

ঘটনার পরই সুশান্ত পিঠটান দেন। কিন্তু এলাকার লোকজন তাকে তাড়িয়ে ধরে ফেলেন। পরে তাকে পুলিশের তুলে দেন তাঁরা। পুলিশ মৃতার স্বামী কানাইবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে সুশান্তকে গ্রেফতার করে। সোমবার ধৃতকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে তিনদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, জেরায় সুশান্ত তার অপরাধ কবুল করেছে।

ঘটনার পর থেকেই সাগরদিঘির মনিগ্রামের রাজমল্ল পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোকস্তব্ধ গ্রামের লোকজনও। বছর দশেক ধরে কানাইবাবু স্ত্রী-পুত্র-দুই মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে মনিগ্রামের হাসপাতাল পাড়ায় থাকেন। টানাটানির সংসারে ছেলের মদ্যপান নিয়ে বাড়িতে নিত্য ঝামেলা লেগেই থাকত। মদ খেয়ে কর্মক্ষেত্রে ঝামেলা পাকানোর জেরে গাড়ি চালানোর কাজ হারায় সুশান্ত। বেশ কিছদিন ধরে সে বাড়িতে বসেছিল।

কানাইবাবু জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মদে চুর হয়ে থাকত ছেলে। নেশা ছাড়ানোর চিকিৎসা পর্যন্ত করিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। ভেবেছিলেন ঘর-সংসার হলে ছেলের মতিগতি বদলাবে। এই ভেবে বছর খানেক আগে ছেলের বিয়ে দেন।

কিন্তু বিয়ের পর থেকেই সুশান্ত আরও রগচটা হয়ে ওঠে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে মদ্যপানও। এবেলা ওবেলা বউকে মারধর করতে থাকে সে। এ নিয়ে থানা-পুলিশও হয়। কিন্তু তাতেও সংশোধন হয়নি সুশান্তের।

এ দিন বাড়িতে ছিল নবান্ন। বাড়িতে সকাল থেকেই রান্নাবান্নার তোড়জোড়। এ দিন সাতসকালেই অশান্তি শুরু করে সুশান্ত। মদ খেয়ে ভাগ্নি পিয়া, বড় দিদি ও স্ত্রী রাধাকে সে পেটাতে থাকে।

সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পিয়া বলেন, “নবান্নে নতুন ধান কাটতে সকালেই মাঠে চলে যান দাদু। বাড়ির সবাই কাজে ব্যস্ত। মামা সকাল থেকেই মদে চুর। একের পর এক মারধর করতে শুরু করে বাড়িতে।” সন্ধ্যে নাগাদ ছেলের তাণ্ডব সীমা ছাড়ায়। তাকে থামাতে যান মা নন্দরাণীদেবী। ছেলেকে ঠেলতে ঠেলতে বাড়ির বাইরে নিয়ে যান। স্ত্রী রাধা জানান, ভেবেছিলেন ছেলে মায়ের কথা শুনবে। কিন্তু কোথায় কী? শাশুড়িকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক লাথি, ঘুষি, চড় মারতে থাকে। এলোপাথাড়ি মারে মাটিতেই লুটিয়ে পড়েন শাশুড়ি।

Sagar Dighi Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy