Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

‘রেড’ শিশুদের জন্য আনাজ ফলাবে মায়েরা

ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের নিউট্রিশন রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক বরুণ বিশ্বাস বললেন, ‘‘চিকিৎসার সুবিধার জন্য বাচ্চাদের এমন রঙে চিহ্নিত করা হয়। এতে খুব সহজেই চিকিৎসকরা ওই শিশুকে দেখে তার অবস্থা বুঝতে পারেন।’’    

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:০০
Share: Save:

চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ফেরাতে উদ্যোগী হল রানিনগর ব্লক প্রশাসন। ওই বাচ্চা এবং তাদের মায়েরা যাতে বাড়িতেই পুষ্টিকর খাদ্য পান, তার জন্য সম্প্রতি রানিনগর ব্লকে ৩৭টি ‘রেড চাইল্ডে’র (চরম অপুষ্টিতে ভোগা শিশু) মা’দের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পুষ্টিকর সব্জির উন্নত বীজ, জৈব সার এবং কীটনাশক। এ ছাড়া, তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচটি করে খাকি ক্যাম্পবেল হাঁসের বাচ্চাও দেওয়া হয়।

সদ্যোজাত শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগলে তাদের বলা হয় ‘রেড চাইল্ড’। এই সব শিশুর জন্য মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলিতে নিউট্রিশন রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থাকে। সেখানে মায়েদের রেখে এই সব শিশুর চিকিৎসা চলে। রেড চাইল্ডের চেয়ে উন্নত স্বাস্থ্যের বাচ্চাদের বলা হয় ‘ইয়েলো চাইল্ড’। আর কোনও বাচ্চা সুস্থ জন্মালে তাদের ‘গ্রিন চাইল্ড’ তালিকাভুক্ত করা হয়। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালের নিউট্রিশন রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক বরুণ বিশ্বাস বললেন, ‘‘চিকিৎসার সুবিধার জন্য বাচ্চাদের এমন রঙে চিহ্নিত করা হয়। এতে খুব সহজেই চিকিৎসকরা ওই শিশুকে দেখে তার অবস্থা বুঝতে পারেন।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, রানিনগর ব্লকে সরকারি হিসেব অনুযায়ী ৩৭টি ‘রেড চাইল্ড’ রয়েছে। এই শিশুদের পুষ্টি বাড়াতে ব্লক প্রশাসনের তরফে নানা সাহায্য করা হয়। ডোমকল মহকুমা হাসপাতালে অপুষ্টিতে ভোগা বাচ্চা এবং তাদের মায়েদের রেখে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হয়। কিন্তু অনেক সময় মায়েরা বাচ্চা নিয়ে হাসপাতালে থাকতে চান না। কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রানিনগর ব্লকে ৩৭টি এমন শিশু আছে জানতে পেরে আমরা তাদের জন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নিই। তার প্রথম উদ্যোগ হিসেবে উন্নত মানের সব্জির বীজ, জৈব সার, কীটনাশক ও হাঁসের বাচ্চা দেওয়া হল।’’

এখানেই শেষ নয়। সব্জি চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানাতে ওই মহিলাদের ঘণ্টাদেড়েক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে রানিনগর-২ ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা মিঠুন সাহা বলেন, ‘‘এটি কোনও সরকারি প্রকল্প নয়। এটি কৃষি দফতর ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগ। আমরা রেড চাইল্ডদের কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ নিয়েছি। জেলা প্রশাসন আমাদের সবরকম ভাবে সাহায্য করছে।’’

ওই মায়েদের পালং, মুলো এবং গাজরের বীজ দেওয়া হয়েছে। গাছ যাতে খুব কম সময়ে বেড়ে ওঠে সে জন্য জৈব সার এবং কীটনাশক ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। প্রীতি খাতুন নামে এক মহিলা বললেন, ‘‘অর্থাভাবে শিশুদের অপুষ্টির কারণ। বাড়ির সামনে একফালি জমিতে এবার সব্জি চাষ করব। বাচ্চাকে সুস্থ করে তুলতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE