প্রতীকী ছবি।
গত তিন মাসে জেলা জুড়ে অন্তত ১২৭ জন নাবালিকার বিয়ে স্থগিত হয়েছে। এ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য কিংবা কন্যাশ্রী যোদ্ধারা আগাম খবর পেয়ে এ সব বিয়ে রুখেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিয়ে বন্ধ করা গিয়েছে মে মাসে। ওই মাসে মোট ৫২ জন নাবালিকার বিয়ে রোখা গিয়েছে।
ফরাক্কার এক গ্রামে শুক্রবার বিয়ে ছিল ১৫ বছর বয়সি নবম শ্রেণির এক পড়ুয়ার। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা হাজির হন ওই গ্রামে পাত্রীর বাড়িতে। কিশোরীর বাবা, মা বাড়িতেই ছিলেন। বহুক্ষণ ধরে বোঝানোর পর তাঁরা এখনই মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা লিখে দেন।
গত দু’ বছরে শুধু ফরাক্কাতেই ১৮৬টি নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড লাগোয়া এই এলাকায় নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। গত দু’ বছরে আমাদের হিসেব অনুযায়ী ১৮৬টি বিয়ে রোখা গিয়েছে। অনেকগুলি বিয়ে আটকানোও যায়নি। পাত্রীকে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে গিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। একবার বিয়ে হয়ে গেলে সামাজিক নানা কারণেই আর কিছু করা যায়নি।’’ বাল্যবিবাহ বন্ধে জেলায় কর্মরত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জেলা আধিকারিক জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘নাবালিকা বিয়ে বড় সমস্যা মুর্শিদাবাদে। গত তিন মাসে ১২৭টি নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করা গেলেও সব বিয়ে বন্ধ করা যায়নি। এপ্রিল মাসে ৩৩টি বিয়ে বন্ধ হয়েছে জেলায়। মে মাসে ৫২টি, জুন মাসে ৪২টি। এক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সহযোগিতার অভাব একটা বড় কারণ। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যরা অনেকেই গ্রামে নাবালিকা বিয়ে হলেও আমাদের খবর পর্যন্ত দেন না। সহযোগিতা পেলে আরও নাবালিকা বিয়ে রোখা যেত।’’ তবে তিনি জানান, এ বার থেকে বাল্যবিবাহ বন্ধে উৎসাহ দিতে রাজ্য সরকার অভিভাবক ও শিক্ষকদের ‘বীরাঙ্গনা’ ও ‘বীরপুরুষ’-এর মতোই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষকরাও নাবালিকা বিয়ে রুখতে সক্রিয় হবেন। স্কুল থেকেই নাবালিকা বিয়ের খবর বেশি মেলে। গত বছর মুর্শিদাবাদ জেলার চার স্কুলপড়ুয়া কিশোর, কিশোরীকে দেওয়া হয় ‘বীরপুরুষ’ ও ‘বীরাঙ্গনা’ পুরস্কার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy