দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগেই বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্টে নদিয়াকে টপকে গেল নবাবের জেলা। দুর্দান্ত ‘স্কোর’ করে সেরা পারফরম্যান্স তালিকায় ঢুকে পড়ল মুর্শিদাবাদ। সম্প্রতি মূল্যায়নের ভিত্তিতে জমা পড়া পঞ্চায়েতের ‘পারফরম্যান্স রিপোর্ট’ অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে আগেই চালু হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক স্বশক্তিকরণ প্রকল্প (ইনস্টিটিউশনাল স্ট্রেনদেনিং অব গ্রাম পঞ্চায়েত বা আইএসজিপি)। পঞ্চায়েতগুলোর কাজের মূল্যায়নের উপরে ভিত্তি করে সেই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করে বিশ্বব্যাঙ্ক। সেই সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য থেকেও মেলে টাকা। তবে তার জন্য একাধিক শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রতি বছর বিশ্বব্যাঙ্কের তরফে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয় কোন পঞ্চায়েত কেমন কাজ করেছে। সম্প্রতি তারই ফল প্রকাশ করেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। মুর্শিদাবাদের সাফল্যের হার প্রায় ৭৫ শতাংশ। নদিয়ায় তা মাত্রই ৫৩ শতাংশ।
মুর্শিদাবাদের ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৮৭টি পঞ্চায়েত এই প্রকল্পে অর্থ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। অন্য দিকে নদিয়ার ১৮৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করেছে ৯৮টি পঞ্চায়েত। গত বছর এই প্রকল্পে নদিয়া জেলার ১৮৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৫৬টি পঞ্চায়েত পাশ করেছিল। এ বারে মাত্র ৯৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত ‘পাশ’ করেছে। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলছেন, “কেন এমনটা হল, খোঁজ নিয়ে দেখছি।” গত বছর মুর্শিদাবাদে এই প্রকল্পের মূল্যায়নে ২৫০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সাকুল্যে ৫৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত ‘পাশ’ করেছিল। এ বারে ১৮৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত অর্থ পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলছেন, “পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে একাধিক বৈঠক, প্রশিক্ষণ শিবির করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল ২৩০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানে ১৮৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত সাফল্য পেয়েছে।”
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের অর্থ পেতে তিনটি শর্ত আবশ্যিক। এক, বাৎসরিক পরিকল্পনা ও বাজেট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় পাশ করাতে হবে। দুই, গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের অর্থ আগের বছরের তুলনায় বেশি হতে হবে। তিন, অডিট রিপোর্টে কোনও বিরূপ মন্তব্য থাকা চলবে না। এই শর্তগুলি পূরণ করতে পারলে তবেই এই প্রকল্পের অর্থ পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও পঞ্চায়েতের বিভিন্ন কাজের মূল্যায়ন করা হয়েছে। সেই মূল্যায়নে যে পঞ্চায়েত যেমন ‘স্কোর’ করেছে সেই পঞ্চায়েতের জন্য তেমন টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে উত্তীর্ণ গ্রাম পঞ্চায়েত বিশ্বব্যাঙ্কের কাছ থেকে ৩০ লক্ষ থেকে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত অনুদান পাবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ৩২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২১৭৮টি এ বারে পাশ করেছে। রাজ্যের গড় সাফল্য ৬৭.৪২ শতাংশ। সারা রাজ্যের নিরিখে ৭৪.৮০ শতাংশ সাফল্য পেয়ে রাজ্যে চতুর্থ হয়েছে মুর্শিদাবাদ। ৫২.৯৭ শতাংশ সাফল্য পেয়ে রাজ্যে নদিয়ার স্থান ১৮।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy