Advertisement
E-Paper

মহরমেও অটুট থাকে সম্প্রীতির বাঁধন

সালার, ভরতপুর, রঘুনাথগঞ্জে শোকের শোভাযাত্রায় তাজিয়াই মূল আকর্ষণ। বাঁশ, কাঠ, রঙিন কাগজ দিয়ে তৈরি তাজিয়া আসলে ইরাকের ফুরাৎ নদীর তীরে কারবালা ময়দানের যুদ্ধে এজিদ বাহিনীর হাতে নিহত হোসেন ও তাঁর অনুগামীদের সমাধির প্রতিরুপ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৭
শহরের পথে দুলদুল। লালবাগে। নিজস্ব চিত্র

শহরের পথে দুলদুল। লালবাগে। নিজস্ব চিত্র

দক্ষিণে ভাগীরথী পাড়ের পলাশির প্রান্তর থেকে শুরু করে উত্তরে পদ্মাপাড়ের ফরাক্কা ব্যারাজ পর্যন্ত। অন্য দিকে পশ্চিমে ময়ূরাক্ষী পাড়ের বড়ঞা থেকে শুরু করে পূর্বে বাংলাদেশের সীমানা লাগোয়া জলঙ্গি পর্যন্ত। মঙ্গলবার সারাদিন নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদ জেলার সর্বত্র মহরমের আশুরা পালনে বিভোর ছিল। এ দিন উপবাস, লাঠিখেলা, মর্সিয়া গান গেয়ে, বুক চাপড়ে, তাজিয়া ও যুদ্ধাস্ত্র সহযোগে ‘কারবালা’র ময়দানে যাওয়া, ক্ষীর-খিচুড়ি বিতরণ করার মতো বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে মহরম মাসের দশম দিবস, অর্থাৎ আশুরা পালন করে। আরবি ভাষায় আশুরা মানে দশম। ইরাকের ফুরাৎ নদীর তীরে কারবালার ময়দানে মাওবিয়ার ছেলে এজিদের সঙ্গে হজরত মহম্মদের নাতি ইমাম হুসেনের যুদ্ধও হয় আরবি বর্ষপঞ্জি অনুসারে ৬১ হিজরির মহরম মাসের ১০ তারিখে। মক্কার শাসন ক্ষমতার দখলদারি নিয়ে এখন থেকে ১৩৬৫ বছর আগের ওই অসম যুদ্ধে হুসেন ও তাঁর সঙ্গী মিলে মোট ৭২ জন খুন হন। ওই ঘটনার পর মুসলিম মানসে মহরমের আশুরা (দশম দিন) উদযাপন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

সালার, ভরতপুর, রঘুনাথগঞ্জে শোকের শোভাযাত্রায় তাজিয়াই মূল আকর্ষণ। বাঁশ, কাঠ, রঙিন কাগজ দিয়ে তৈরি তাজিয়া আসলে ইরাকের ফুরাৎ নদীর তীরে কারবালা ময়দানের যুদ্ধে এজিদ বাহিনীর হাতে নিহত হোসেন ও তাঁর অনুগামীদের সমাধির প্রতিরুপ। সালার, ভরতপুর, কান্দিতে মহরমের দশম দিন পালনের রীতিনীতির বিপরীত আদব কায়দা দেখা যায় বেলডাঙা, রেজিনগর, বহরমপুর, হরিহরপাড়া, ইসলামপুর, ডোমকল, লালগোলা, ভগবানগোলা এলাকায়। এই সব এলাকায় লাঠি ও তরোয়াল খেলাটাই মূল আকর্ষণ। লাঠি ও তরোয়াল চালানো আসলে এজিদ বাহিনীর সঙ্গে হোসেন বাহিনীর যুদ্ধের নকল মাত্র।

লালবাগের নবাবদের বংশধররা বরাবরের মতো এবারও মঙ্গলবার সকালে হাজারদুয়ারি প্যালেস লাগোয়া ইমামবাড়ি থেকে বুক-পিঠ চাপড়ে, ‘হায় হাসান! হায় হোসেন!’-এর মতো শোকগাথা গেয়ে, মাতম তুলে, খালি পায়ে টানা ছ’ঘণ্টা পায়ে হেঁটে, তাজিয়া, নিশান, যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে পৌঁছেছেন চার কিলোমিটার দূরের আমানিগঞ্জে কারবালার মাঠ। ওই শোকযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের এ বারেও ‘সিটি মুর্শিদাবাদ ব্যবসায়ী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক স্বপনকুমার ভট্টাচার্য গোলাপজল ছিটিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মহরমকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় মেলাও বসে। থাকেন সব সম্প্রদায়ের মানুষ।’’

Muharram Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy