প্রতীকী ছবি।
হাসপাতাল থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নামে মা ও সদ্যোজাতকে ভরদুপুরে কড়া রোদে মাঝ রাস্তায় নামিয়ে ফেলে পালাল জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের এক নিশ্চয় যান চালক। নিশ্চয় যান চালকের দাবি মতো ৩০০ টাকা বকশিস দিতে রাজি না হওয়ার কারণেই মা, শিশুর এই দুর্গতি।
ঘটনার পরপরই খবর যায় হাসপাতাল সুপারের কাছে। ঘণ্টা দেড়েক পরে হাসপাতাল থেকে আর একটি নিশ্চয় যান পাঠিয়ে উমরপুর- মিত্রপুর রাজ্যসড়কে জরুরের রাস্তা থেকে ওই প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে উদ্ধার করে কাশিমনগরে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়।
জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার সায়ন দাস জানান, বিনা খরচে প্রসূতিকে হাসপাতালে আনা ও বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্যই ওই সব নিশ্চয় যানগুলি রাখা হয়েছে সরকারি হাসপাতালে। কোনও প্রসূতির পরিবারের কাছ থেকে পয়সা চাওয়ার কথাই নয় তাদের।
হাসপাতাল থেকে নিয়মিত সেই খরচ মেটানো হয়।
সুপার বলেন, “এ নিয়ে অভিযোগ আমি পেয়েছি। ওই নিশ্চয় যানটিকে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তার সমস্ত পেমেন্ট আটকে দিয়ে সরকারি নিয়ম মেনে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নেওয়া হবে। করা হবে জরিমানাও।”
ওই প্রসূতির নাম ইয়াসমিন খাতুন। বাড়ি বীরভূমের কাশিমনগর গ্রামে। বুধবার বেলা ১২টা ২৫ মিনিট নাগাদ জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ওই মা ও শিশু। প্রসূতির সঙ্গে ছিলেন তার মা ও বাবা। এ দিন হাসপাতাল থেকে একটি নিশ্চয় যানে চেপে রওনা দেন তারা। উমরপুর –মিত্রপুর সড়কে জরুর পেরোতেই ঘটে বিপত্তি।
বাবা দিলমহম্মদ শেখের অভিযোগ, “গাড়িতে ওই চালক দাবি করেন তাকে ৩০০ টাকা দিতে হবে। আমি তাকে বলি এত টাকা নেই। দিতেও পারব না। বাড়িতে পৌঁছে কিছু টাকা মিষ্টি খেতে দেব। বেশি টাকা দিতে পারব না। কিন্তু ৩০০ টাকার দাবি ছাড়তে রাজি হননি ওই যান চালক। এরপর জরুর পেরিয়েই রাস্তায় গাড়িটি দাঁড় করিয়ে দেন ওই চালক। বলেন সকলকে নেমে যেতে। কেন নেমে যাব, এ কথা জানতে চাইলে চালক সাফ জানিয়ে দেন ৩০০ টাকা না পেলে গাড়ি নিয়ে যাব না। এ নিয়ে কিছুক্ষণ তর্ক বিতর্কের পরে সকলেই গাড়ি থেকে নেমে যেতে বাধ্য হই।”
পাশেই একটি জায়গায় আখ থেকে গুড় তৈরি করছিল কিছু লোকজন। তারা এ সব দেখে এগিয়ে আসেন। সব শুনে তাদেরই একজন ফোন করেন জঙ্গিপুর হাসপাতালে। হাসপাতাল সুপার ছিলেন বহরমপুরে। ততক্ষণে নিশ্চয় যানটি ওদের নামিয়ে দিয়ে পালিয়েছে।
সুপার সব শুনে বিকল্প একটি নিশ্চয় যানকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কিন্তু তত ক্ষণে কেটে গেছে প্রায় দেড় ঘন্টা। সেই নিশ্চয় যান সদ্যোজাত ও তার মাকে রাস্তা থেকে তুলে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন। এই পরিস্থিতিতে অনেক রোগীর পরিবারই খুব চিন্তিত। তাদের বক্তব্য, কড়া পদক্ষেপ না করলে আবারও এমন হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy