Advertisement
E-Paper

পুড়ে যাওয়া বধূর জুটল না কোনও অ্যাম্বুল্যান্স, মাতৃৃযান

অগ্নিদগ্ধ হয়ে ছটফট করছেন বছর আঠারোর তরুণী বধূ। তাঁর চিৎকারে ছুটে এসেছেন পড়শিরা। ততক্ষণে পলাতক স্বামী-শ্বশুর। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ভরসা গ্রামবাসীই। কিন্তু গাড়ি কোথায়? রবিবার বিকেলে নদিয়ার তেহট্টের বরেয়া গ্রামবাসীদের একজন প্রথমে গাড়ির জন্য ফোন করেন তেহট্টের যুগ্ম বিডিওকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৩

অগ্নিদগ্ধ হয়ে ছটফট করছেন বছর আঠারোর তরুণী বধূ। তাঁর চিৎকারে ছুটে এসেছেন পড়শিরা। ততক্ষণে পলাতক স্বামী-শ্বশুর। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে ভরসা গ্রামবাসীই। কিন্তু গাড়ি কোথায়?

রবিবার বিকেলে নদিয়ার তেহট্টের বরেয়া গ্রামবাসীদের একজন প্রথমে গাড়ির জন্য ফোন করেন তেহট্টের যুগ্ম বিডিওকে। তিনি পলাশীপাড়ার ব্লক স্বাস্থ্য অধিকর্তার (বিএমওএইচ) সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে দায় সারেন। বিএমওএইচ-কে ফোন করলে তিনিও জানিয়ে দেন, তাঁদের গাড়ি কিংবা অ্যাম্বুলেন্স কোনওটাই নেই। বাসিন্দারা মাতৃযানের জন্য আর্জি জানান। জবাবে শুনতে হয়, “মাতৃযান শুধুমাত্র মা ও শিশুদের জন্য।”

শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের আবেদনে সাড়া দেন তেহট্ট থানার আইসি। তিনিই একটি বেসরকারি গাড়ির ব্যবস্থা করে অগ্নিদগ্ধ ওই তরুণী রীতা ঘোষকে গ্রাম থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে পলাশীপাড়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ততক্ষণে কেটে গিয়েছে প্রায় তিন ঘণ্টা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পলাশীপাড়া থেকে ওই তরুণীকে প্রথমে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল ও পরে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। রবিবার সেখানেই মারা যান তিনি।

ওই তরুণীর মৃত্যুর পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বরেয়ার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, প্রশাসন যে কতটা অমানবিক হতে পারে তা এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।”

এ ভাবে দায় এড়ানো কেন? তেহট্ট ২ ব্লকের যুগ্ম বিডিও বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তীকে বহু বার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তেহট্টের মহকুমাশাসক অর্ণব মুখোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনাটি খুব দুঃখজনক। এমন ঘটনার কথা আমি জানি না। যুগ্ম বিডিও-র উচিত ছিল বিষয়টি আমাকে জানানোর। তিনি কেন এমন করলেন তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পলাশীপাড়ার ওই বিএমওএইচ শ্যামল বিশ্বাসের দায়সারা জবাব, “মাতৃযান শুধু মা এবং এক বছরের কমবয়সী শিশুদের ব্যবহারের জন্য। তাই এ সব ক্ষেত্রে আমরা ওই গাড়ি ব্যবহার করতে পারি না।” নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অধীপ ঘোষও বলেন, “মাতৃযান ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। ওই বিএমওএইচ যা করেছেন, সরকারি নিয়ম মেনেই করেছেন।”

মৃতার দাদা প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, “এখন মনে হচ্ছে বোনকে দ্বিতীয়বার ওই বাড়িতে না পাঠানোই ভাল ছিল। বোনকে ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পুড়িয়ে মেরেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও জানাব।”

তেহট্টের আাইসি জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “এরকম বিপদের সময় একজন সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষের যা করার দরকার আমি সেটাই করেছি। এটাকে বিরাট করে দেখানোর কিছু নেই। তবে আফশোস একটাই, ওই তরুণীকে বাঁচানো গেল না।” আইসি জানান, মৃতার পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

rita ghosh palashipara burnt housewife state news latest news online news latest news online
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy