লরির সঙ্গে সংঘর্ষ ট্রেনের। —নিজস্ব চিত্র।
মধ্যরাত, যাত্রীরা সবাই তখন গভীর ঘুমে। ঠিক রাত দেড়টা নাগাদ প্রবল ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে গেল যাত্রীদের। প্রত্যেকেই বুঝতে পারলেন, কোনও বড় একটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে ট্রেনটি। জানলা দিয়ে মুখ বার করতেই তাঁরা দেখেন দাউদাউ করে জ্বলছে ট্রেনের একটি কামরা! রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ বালিবোঝাই লরির সঙ্গে আপ রাধিকাপুর এক্সপ্রেসের সংঘর্ষ হয়। যদিও চালকের তৎপরতায় ট্রেনটি বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে মধ্যরাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। যায় রেলরক্ষী বাহিনী এবং দমকলের দু’টি ইঞ্জিন। দমকলের তৎপরতায় ঘণ্টাখানেক পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনার জেরে প্রায় ১৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের কারও আঘাত গুরুতর নয় বলে জানা গিয়েছে। রেল লাইনের উপরে একটি মালবাহী লরি চলে আসায় এই দুর্ঘটনা বলে। রেল সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপ রাধিকাপুর এক্সপ্রেস রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে ছেড়ে রাধিকাপুর যাচ্ছিল। রাত দেড়টা নাগাদ মুর্শিদাবাদ জেলার ফরাক্কার বল্লালপুর সেতুর নীচে রেললাইনের উপর একটি বালিবোঝাই লরি চলে আসে। লরিটিকে দেখেই ট্রেনের চালক আপৎকালীন ব্রেক কষেন। কিন্তু তাতেও সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়নি। ভাল রকম গতিতে ছুটে চলা রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ধাক্কা মারে বালিবোঝাই লরিতে।
সংঘর্ষ এবং হঠাৎ ব্রেক কষার কারণে ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন লেগে যায়। ইঞ্জিনের চাকাও লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন রেল দফতরের একাধিক আধিকারিক। রেল পুলিশ এবং ফরাক্কা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনীও ঘটনাস্থলে আসে। ট্রেনের ধাক্কায় লরিটি দুমড়েমুচড়ে যায়। সেখানকার রেললাইনের একটি অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দুর্ঘটনার জেরে বেশ কিছু ক্ষণ ওই লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। মুর্শিদাবাদে উত্তরবঙ্গগামী রেল লাইনে বার বার মালবাহী লরি চলে আসায় রেলের যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও রেল কর্তাদের দাবি, দুর্ঘটনা এড়াতে যথাসম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত আপ রাধিকাপুর এক্সপ্রেসে ছিলেন রায়গঞ্জের বাসিন্দা প্রবীর মণ্ডল। তিনি বলেন, “হঠাৎ প্রচন্ড ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম ভাঙতেই জানলা দিয়ে মুখ বার করে দেখি দাউদাউ করে একটি কামরা জ্বলছে। পরে জানতে পারি ওটা ইঞ্জিন। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমাদের মধ্যে বেশ কয়েক জন অল্প চোট পেয়েছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy