মুর্শিদাবাদে পর্যটন শিল্পে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে আম থেকে শুরু করে রেশম শিল্পেরও নাম ডাক রয়েছে দেশ জুড়ে। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শুরুতে হয়ে যাওয়া কেন্দ্রীয় বাজেটে এই সব শিল্পের উন্নয়ন নিয়ে কোনও বরাদ্দ করেনি। বুধবার রাজ্য সরকারের যে বাজেট হল, সেখানেও শিল্প উন্নয়নে এক রকম শূন্য থাকল মুর্শিদাবাদ। পরোক্ষ ভাবে কিছু উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, মুখ্যমন্ত্রী যে আর্থিক করিডরগুলির কথা বলেছেন, তার সুবিধা মুর্শিদাবাদও পাবে।
তবে জেলার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে ভারী কোনও শিল্প নেই। মাঝারি শিল্প খুব কম রয়েছে। যার জেরে কর্মসংস্থানের যথেষ্ট অভাব থাকায় লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন্ রাজ্যে, ভিন্ দেশে পাড়ি দেন। অথচ এই মুর্শিদাবাদ জেলায় পর্যটন থেকে শুরু করে ভারী কিংবা মাঝারি শিল্প, আম এবং রেশমকে কেন্দ্র করে শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার বাজেটে কোনও বরাদ্দ করেনি।
মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের পর্যটন শিল্পের নাম রয়েছে যথেষ্ট। শুধু ভারত নয়, বিদেশ থেকেও বহু পর্যটক মুর্শিদাবাদে আসেন। কিন্তু মুর্শিদাবাদের পর্যটন শিল্পের মান উন্নয়নে না কেন্দ্রীয় সরকার, না রাজ্য সরকার কোনও প্রকল্প হাতে নেয়নি। সেই সঙ্গে মুর্শিদাবাদের আম এবং রেশম শিল্পের খ্যাতি রয়েছে দেশ জুড়ে। এ সব শিল্পে বাজেটে কোনও বরাদ্দ নেই। নদী বন্দরের দাবি দীর্ঘ দিনের। কিন্তু সেই নদী বন্দরের কথাও উঠল না বাজেটে।’’
তবে বাজেটে উল্লেখ না থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী ৬টি আর্থিক করিডরের কথা বলেছেন। যার মধ্যে দু’টি মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে যাওয়ার কথা। একটি খড়্গপুর থেকে মুর্শিদাবাদের মোড়গ্রাম পর্যন্ত এবং অন্যটি ডানকুনি থেকে কোচবিহার পর্যন্ত। সেটিও রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে মুর্শিদাবাদের উপর দিয়ে যাবে বলে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘শিল্পবৃদ্ধির জাতীয় হারের থেকে রাজ্যের হার বেশি। ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পে দেশের মধ্যে আমাদের রাজ্য দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। ফলে কর্মসংস্থান বা শিল্পায়নের যে কথা বলা হচ্ছে এই তথ্যের প্রমাণ করছে যে আমাদের রাজ্যে শিল্পায়ন কর্মসংস্থানে এগিয়ে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘রেশম বা আম বা পর্যটনের বিষয়ে যে সব দফতর রয়েছে সেই দফতরের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। সেই সব দফতর থেকে নানা প্রকল্প করবে। ফলে বরাদ্দ হয়নি তা নয়।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)