বিদ্যুতের মাসুল কমাচ্ছে এনটিপিসি। ফরাক্কার ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল ভরসা কয়লা। গত কয়েক মাসে সেই কয়লার দাম কমে যাওয়ায় সেই অনুপাতে কমে গিয়েছে উৎপাদন খরচ। আর, তার জেরেই এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের মাসুল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সোমবার, ফরাক্কায় ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর অরবিন্দকুমার সিংহ সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যুতের মাসুল কমানোর সিদ্ধান্ত পাকা হলেও, কী হারে কমবে, তা পরে জানানো হবে।
এ দিন, এনটিপিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ ভাবে উৎপাদিত বিদ্যুতের খরচের ৮৩ শতাংশই ব্যায় হয় কয়লা কিনতে। ফলে বিদ্যুতের দাম নির্ভর করে কয়লার দাম কমা-বাড়ার উপরে। গত কয়েক মাসে কয়লার দাম কমে যাওয়ায়, উৎপাদিত বিদ্যুতের তুলনায় এ বারে সে খরচ অনেকটাই কমে গিয়েছে। এনটিপিসি-র এক কর্তা জানান, ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের খরচ ৩ টাকা ৯০ পয়সা থেকে এখন নেমে এসেছে ৩ টাকা ৬০ পয়সায়। অচিরে, সেই হারেই কমানো হবে বিদ্যুতের মাসুলও।
তিনি জানান, শীতকালে রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা গত বছরের চেয়ে বেশ খানিকটা বেসি রয়েছে। চাহিদা বেড়েছে পড়শি রাজ্য বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশাতেও।
২১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন ফরাক্কা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বর্তমানে গড়ে ১৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। যা থেকে সব চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ পায় এ রাজ্য, ৩২শতাংশ। বিহারের দাবি, ২৬ শতাংশ। বাকি বিদ্যুৎ যায় ঝাড়খণ্ড, সিকিম, ওড়িশা-সহ অন্য রাজ্যে।
২১০০ মেগাওয়াটের ৬ টি ইউনিটের জন্য দৈনিক ৩০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা লাগে বলে এনটিপিসি কর্তপক্ষের দাবি। বছরে যার পরিমাণ প্রায় ১০.৬ মিলিয়ন টন। যার সিংহভাগই আসে ইস্টার্ন কোল ফিল্ডস-এর রাজমহল ক্যাপটিভ কয়লা খনিগুলি থেকে। বর্তমানে কয়লামন্ত্রক হস্তক্ষেপ করায় ইসিএল থেকে কয়লার জোগান অনেকটাই বেড়েছে। পাশাপাশি ইন্দোনেশিয়া থেকেও জলপথে কয়লা আসছে ২০১৩ সাল থেকে। ঝাড়খম্ডের তুলনায় গুণমানে সে কয়লা ভাল। ফলে স্বল্প খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বেড়েছে যথেষ্ট।
ওই তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “গত বছর ফরাক্কায় বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল ৮২৭১ মিলিয়ন ইউনিট। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ৮৯২৬ মিলিয়ন ইউনিট। অর্থাৎ কম কয়লা ব্যবহার করে ফরাক্কায় এনটিপিসির উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ইউনিট।’’
এ বছর শুখা মরশুমে গঙ্গা থেকে বাংলাদেশকে চুক্তি মেনে জল দেওয়ার ফলে ফরাক্কায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত না হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাত্রা আরও বাড়ত বলে দাবি করেছেন এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy