Advertisement
E-Paper

বিড়িতে কম মজুরি, ক্ষোভের মুখে মুন্সি

কম মজুরি নিতে অস্বীকার করে প্রায় শ’দেড়েক মহিলা শ্রমিক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁকে ঘিরে। ঘণ্টা খানেক ধরে বিক্ষোভের পরে অবশ্য মজুরি দেওয়া বন্ধ রাখেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০৩:১৩
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

বিড়ি বাঁধিয়ে কম মজুরি দেওয়ায় রবিবার বিড়ি শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন এক বিড়ি মুন্সি। এ দিন সকালে সুতির শেরপুর গ্রামে শ্রমিকদের কাছ থেকে বিড়ি নিয়ে তার মজুরি দিচ্ছিলেন সেতার শেখ নামে ওই বিড়ি মুন্সি। চুক্তি মতো হাজার বিড়ি বাঁধলে শ্রমিকদের মজুরি পাওয়ার কথা ১৫২ টাকা করে। কিন্তু অভিযোগ, তিনি শ্রমিকদের মজুরি দিচ্ছিলেন ১০০ টাকা করে। কম মজুরি নিতে অস্বীকার করে প্রায় শ’দেড়েক মহিলা শ্রমিক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁকে ঘিরে। ঘণ্টা খানেক ধরে বিক্ষোভের পরে অবশ্য মজুরি দেওয়া বন্ধ রাখেন তিনি।

ওই বিড়ি মুন্সি বলেন, ‘‘লকডাউনে কারও হাতে কাজ নেই। বিড়ি সরবরাহ তেমন করা যাচ্ছে না। তাই লোকের সুবিধা হবে বলেই এই অবস্থার মধ্যেই শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। আর বিড়ি বাঁধাব না।’’

কিন্তু পাল্টা অভিযোগ উঠেছে, শুধু শেরপুরেই নয়, বড় বড় বিড়ি কারখানাগুলি বন্ধ, শ্রমিকদের কাজও নেই, সেই সুযোগেই ছোট ছোট বিড়ি মালিক ও মুন্সিরা কম মজুরিতে বিড়ি বাঁধিয়ে নিচ্ছেন। এই অভিযোগ তুলেছে সিটু ও আইএনটি ইউসির বিড়ি শ্রমিক সংগঠন।

তারা জানাচ্ছে, ২৩ মার্চ থেকেই জঙ্গিপুরের বিড়ি শিল্পাঞ্চলের সমস্ত বিড়ি কারখানা বন্ধ। ফলে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ৬ লক্ষ বিড়ি শ্রমিক। পরে বিড়ি বাঁধার কাজ শুরু হলেও লকডাউনের জন্য সরবরাহের অবস্থা ঠিক হয়নি। কিন্তু বিড়ি শিল্পাঞ্চলে বহু ছোট ছোট বিড়ি কারখানা রয়েছে যার মালিকেরা ২০ থেকে ৫০ হাজার বিড়ি বাঁধিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। তাঁরাই মূলত বেকার শ্রমিকদের এখন কম মজুরিতে কাজ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ।

এক মাস ধরে কর্মহীন হয়ে থাকায় বিড়ি মহল্লায় শ্রমিকদের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীন বলে জানিয়ে সিটুর বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের রাজ্য সভাপতি আবুল হাসনাত খানের অভিযোগ, “বিড়ি শ্রমিকদের বিড়ি বাঁধাইয়ের উপর রাজ্য সরকার ছাড় ঘোষণা করলেও তা কোনও কাজে আসেনি। বড় কারখানাগুলি এখনও না খোলার ফলে কাজ ফিরে পাননি শ্রমিকেরা। তারই সুযোগ নিয়ে বিড়ি শিল্পাঞ্চলের অর্থাভাবে বিড়ি শ্রমিকেরাও বাধ্য হচ্ছেন কম মজুরিতে বিড়ি বাঁধতে। শ্রমিক সংগঠন থেকে এর বিরুদ্ধে হইচই করতে গেলে শ্রমিকদের সে কাজটুকুও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই আমাদের দাবি, পুলিশ ও শ্রম দফতর উদ্যোগী হয়ে ছোট ছোট বিড়ি মালিকদের ঠিক মজুরি দিতে বাধ্য করুক।’’

আইএনটিইউসি-র বিড়ি শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক বাদশার আলি বলছেন, “মুর্শিদাবাদে বিড়ি শ্রমিকেরা নিজের বাড়িতে বিড়ি বাঁধাই করে ঠিকই, কিন্তু বিড়ি তৈরির পাতা, তামাক সবই দেয় বিড়ি কারখানাগুলি। তা দিয়েই বাড়িতে বসে বিড়ি বাঁধেন শ্রমিকেরা। কারখানা বন্ধ থাকলে শ্রমিকরা বিড়ি বাঁধবেন কিভাবে? রাজ্য সরকারের ছাড় ঘোষণা তাই কোনও কাজে আসেনি। সংসার চালাতে অনেক শ্রমিকই প্রায় অর্ধেক মজুরিতে বিড়ি বাঁধতে বাধ্য হচ্ছেন।”

বিড়ি মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলছেন, “আমাদের বড় বিড়ি কারখানা খোলার কোনও অনুমতি নেই। শনিবার থেকে রোজা শুরু হয়েছে। আমরা সরকারকে লিখেছি এই রমজান মাসের জন্য অন্তত বিড়ি কারখানাগুলি খোলার অনুমতি দেওয়া হোক। সেই অনুমতি দিলেই শ্রমিকদের ঠিক মজুরি দিতে অসুবিধা হবে না।” জঙ্গিপুরের সহকারী শ্রম কমিশনার রথীন সেন বলছেন, “শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে এমন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে তখন নিশ্চয় ব্যবস্থা নেব।”

Beedi Workers Salaries
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy