তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিয়রে পঞ্চায়েত ভোট। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোর কমিটির বৈঠকে পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, রুখতে হবে বিজেপি-র বাড়বাড়ন্ত। তার জন্য সব থেকে আগে দরকার দলের গোষ্ঠী কোন্দল সামাল দেওয়া। ফলে, এত দিন যে নেতা-নেত্রীদের দ্বন্দ্বকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি দল, এ বার সেই সব বন্ধে কঠোর বার্তা দিল রাজ্য নেতৃত্ব।
শনিবার শান্তিপুরে দলে বিবদমান দুই নেতা—অজয় দে এবং অরিন্দম ভট্টাচার্যকে বাড়িতে ডেকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ওই বৈঠকেই চাকদহ এবং তেহট্টের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব রুখতে একই ভাবে জেলা নেতৃত্বের মাধ্যমে বিবদমান নেতাদের চরম সতর্ক করা হল।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই চাকদহে দলের অভ্যন্তরের কোন্দল থামাতে জেরবার নেতৃত্ব। কখনও হরিণঘাটার বিধায়ক নীলিমা নাগ ও চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষ আবার কখনও চাকদহের পুরপ্রধান দীপক চক্রবর্তী আর রত্নার বিবাদ প্রকাশ্যে এসেছে।
এত দিন দলের যুব শহর সভাপতি ছিলেন দীপকের ঘনিষ্ঠ তাপস অধিকারী। সম্প্রতি তাঁকে সরিয়ে সাধন বিশ্বাসকে। ওই পদে বসান রত্না। সমর তাঁরই অনুগামী। এই পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বিস্তর জলঘোলা হয়। শহর তৃণমূলের সভাপতি দীপক যা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেন। দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে বেআব্রু হয়ে পড়ে গোষ্ঠী কোন্দল। রত্নাও বিষয়টি জানান রাজ্য নেতৃত্বকে। শনিবারের বৈঠকে অজয়, অরিন্দমের পাশাপাশি হাজির ছিলেন, জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস, বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্ত, তিন কার্যকরী সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা, কল্লোল খাঁ, শঙ্কর সিংহ ও রানাঘাটের সাংসদ তাপস মন্ডল।
পার্থ জেলা নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন যে, দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই যুব’র সভাপতি পরিবর্তন হয়েছে। এর পরেও দীপক তার বিরোধিতা করলে তাঁর পদ টলমল হতে পারে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
পলাশিপাড়ার গোষ্ঠী কোন্দলের প্রসঙ্গ তোলেন পার্থ। জেলা নেতৃত্বকে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, দুই নেতা, বিধায়ক তাপস সাহা ও প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষকে ডেকে বিবাদ থামাতে হবে। একসঙ্গে হাত মিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের কাজে নামতে হবে। এই নির্দেশ না পারলে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পলাশিপাড়ার এই দুই নেতার বিবাদ দীর্ঘ দিনের। বিধানসভা ভোটের আগে তাপস তাঁকে হারাতে বিরোধীর সঙ্গে হাত মেলানোর অভিযোগ করেন বিশ্বনাথের নামে। সম্প্রতি তাপসের সুপারিশে তেহট্ট-২ ব্লকের সভাপতির পদ থেকে বিশ্বনাথকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে বিবাদ আরও প্রকট হয়।
এই বিবাদের প্রভাব পঞ্চায়েত ভোটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেছিলেন জেলা নেতারাও। তাই, ঝুঁকি না নিয়ে পার্থবাবু দুজনকেই কড়া বার্তা দিলেন। তার ফলে তাঁদের কাজ অনেকটা সহজ হল বলে মনে করছেন জেলা নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়িত করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy