Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Krishnanagar

ওষুধের দোকান বন্ধ রাতে, সঙ্কটে রোগী

 কয়েক বছর আগেও কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল না। শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালের পাশাপাশি এলাকায় পর্যায়ক্রমে একটি করে দোকান খোলা থাকত।

বন্ধ ওযুধের দোকান, অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে হন্নে হয়ে ঘুরে বেড়ালেন বাবা।

বন্ধ ওযুধের দোকান, অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে হন্নে হয়ে ঘুরে বেড়ালেন বাবা। প্রতীকী চিত্র।

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ০৭:০০
Share: Save:

অসহ্য পেটে যন্ত্রণা। সঙ্গে টানা শুকনো কাশি। কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কুঁকড়ে যাচ্ছে বছর চারেকের শিশু। বাধ্য হয়েই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ তাকে কোলে নিয়ে চাপড়ার প্রত্যন্ত এলাকা হাঁটরা থেকে কৃষ্ণনগরে জেলা সদর হাসপাতালে ছুটে এসেছেন মনজুর মোল্লা। তিনটি ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হবে।

কিন্তু কোথায় ওষুধ?

জেলা হাসপাতালের দু’টি ক্যাম্পাস কৃষ্ণনগর শহরের দুই প্রান্তে। তাদের মধ্যে দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। গোটা শহরে প্রায় ৩০০ ওষুধের দোকান আছে। তার মধ্যে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের আশেপাশেই রয়েছে ১৫-১৬টি। জেলা সদর হাসপাতালের আশেপাশে প্রায় ৫০-৬০টির মতো দোকান আছে। কিন্তু একটিও রাতে খোলা থাকে না!

কয়েক বছর আগেও কিন্তু পরিস্থিতি এমন ছিল না। শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালের পাশাপাশি এলাকায় পর্যায়ক্রমে একটি করে দোকান খোলা থাকত। কিন্তু হাসপাতালের ক্যাম্পাসগুলিতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান খোলার কিছু পর থেকে সেগুলি রাতে বন্ধ হয়ে যায়। ওষুধ বিক্রেতাদের সংগঠন ‘বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক স্বপন সাহা বলেন, “ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান চালু হাওয়ার পর থেকে রাতে বাইরের দোকানে বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের সদস্যেরা রাতে দোকান খুলে রাখেন না। তা ছাড়া রাতে নিরাপত্তার বিষয়টাও একটা কারণ।”

জেলা হাসপাতালের দুই ক্যাম্পাসের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের মালিক গোপীনাথ দে বলছেন, “আমাদের ১২২ রকম জেনেরিক ওষুধ রাখাটা বাধ্যতামূলক। আমরা সেটা রেখে থাকি। অনেক সময় স্টক শেষ হয়ে গেলে পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা ব্রান্ডেড ওষুধও জরুরি ভিত্তিতে রেখে দেই। ফলে সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে অনেক সময়ই চিকিৎসকেরা ওই ১২২টির বাইরে কোনও ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লেখেন। তখনই হয় সমস্যা।”

যা শুনে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, রোগীর শারীরিক অবস্থার উপরে ভিত্তি করে জরুরি প্রয়োজনে অনেক সময় অন্য ওষুধ লিখতেই হয়। যাকে বলে ‘টার্গেট ড্রাগ’। সেটা না হলে রোগ নিরাময় করা সম্ভব হয় না।

ডিস্ট্রিক্ট ড্রাগ কন্ট্রোলার কৃষ্ণাঙ্গ ভট্টাচার্যের কথায়, “আমরাওষুধের দোকানের মালিককে রাতে দোকান খুনে রাখতে বাধ্য করতে পারি না। তবে কোনও দোকানদার যদি রাতে দোকান খোলা রাখতে উৎসাহী হয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তা হলে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে পারি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar Medicine Shop
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE