Advertisement
E-Paper

লকডাউন! ফের চাঙ্গা মদের দোকান

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে নদিয়া জেলা জুড়ে ২৫টি কনটেনমেন্ট জ়োনে শুরু হয়েছে কঠোরতর লকডাউন।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০৯:১৮
—ফাইল ছবি

—ফাইল ছবি

কাউন্টার থেকে বোতল টেনে নিয়ে মাথাটা একটু ঝুঁকিয়ে তিরিশের যুবক জানতে চান, “কাল দোকান খোলা তো দাদা? কন্টেনমেন্ট জ়োন হয়ে গেলে তো আবার বন্ধ!” ভিতর থেকে মুচকি হাসিতে আশ্বাস আসে। যুবকটি কিন্তু ঝুঁকি নিতে নারাজ। এক সঙ্গে তিন বোতল বাংলা কিনে বেরোতে বেরোতে বলেন, “লকডাউনে অনেক ভুগেছি। সে কি ভুলতে পারি?”

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা থেকে নদিয়া জেলা জুড়ে ২৫টি কনটেনমেন্ট জ়োনে শুরু হয়েছে কঠোরতর লকডাউন। তা নিয়েই গত দুদিন ধরে মদ্যপায়ীদের টেনশন— দোকান খুলবে তো? মদ পাওয়া যাবে তো? একটা সংক্রমণ ধরা পড়লেই তো আবার দোকানের এলাকাটা কনটেনমেন্ট জ়োন হয়ে যাবে। ব্যস, ঝাঁপ বন্ধ! নিজের বাড়ি কনটেনমেন্ট জ়োনে পড়লেও তো বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ। তখন মদ মিলবে কী করে?

কার্যত এই আশঙ্কার জেরেই গত কয়েক সপ্তাহের মন্দা ব্যবসার পরে ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছে জেলার বহু মদের দোকান। লকডাউন উঠে যাওয়ার প্রথম কয়েকটা দিন দোকানে-দোকানে লম্বা লাইন পড়লেও খরিদ্দারদের সেই উৎ সাহ অচিরেই ফিকে হয়ে গিয়েছিল। একে তো লোকের হাতে কাজ নেই, তার উপরে মদের দামও এক লাফে বাড়িয়ে দেওয়া ৩০ শতাংশ। স্বাভাবিক ভাবেই বিক্রি কমেছে। ক্রেতাদের একাংশ আবার বিলিতি বাংলা মদের দিকে ঝুঁকেছেন।

কৃষ্ণনগরের এক মদ বিক্রেতার কথায়, “এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মী রোজ আমার থেকে রামের ছোট বোতল নিয়ে যেতেন। এখন তিনি বাংলার বোতল নিয়ে যাচ্ছেন। এমনটা কিন্তু অনেকেই করছেন। সস্তা বিলিতি মদ যা-ও বা বিক্রি হচ্ছে, দামি বোতল পড়ে থাকছে।”

তবে কন্টেনমেন্ট জ়োনে কড়াকড়ির বিষয়টি জানার পর, বিশেষ করে বুধবার বিকেল থেকে মদ বিক্রি ফের বেড়েছে। নদিয়া জেলায় একাধিক মদের দোকান আছে সৌভিক সরকারের। তিনি বলেন, “সব জায়গায় না হলেও বুধবার বিকেল থেকে কিন্তু কৃষ্ণনগর সংলগ্ন কাউন্টারে মদ বিক্রি বেড়েছে। অনেকে এসে খোঁজ নিয়ে যাচ্ছেন, দোকান বন্ধ হয়ে যাবে কিনা।”

নদিয়া লিকার অ্যাসোশিয়েশনের সম্পাদক সুমিত তরফদার বলেন, “লকডাউন উঠে যাওয়ার কিছু দিন পর থেকে বেশির ভাগ দোকানে বিক্রি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছিল। বুধবার বিকেল থেকে বিক্রি ফের কিছুটা হলেও উঠতে শুরু করেছে। সারা দিনে প্রচুর ফোন আসছে। লোকে জানতে চাইছে, মদের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে কিনা। লকডাউনের অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই একটু বেশি করে কিনে রাখছেন।”

এক তৃণমূল নেতা করোনা সংক্রমণের জেরে গত কয়েক দিন ধরে আতঙ্ক বেশি ছড়িয়েছে রানাঘাটে। বিকেল ৫টার খানিক আগে শহরের একটি কাউন্টার থেকে ‘সন্ধের রেশন’ হাতে বেরিয়ে এসে এক পরিচিত মাঝবয়সী ভুরু নাচিয়ে বলে যান— “আমার বাড়িটাও যদি কন্টেনমেন্ট জ়োনে পড়ে যায়, ক্ষতি নেই। ঠিক ম্যানেজ করে বোতল এনে নেব। এই দোকানটা যেন আবার লকডাউনে না পড়ে!”

Wine Shop Containment Zone Covid 19 Coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy