Advertisement
১৮ মে ২০২৪
ফল কী হবে তা তো রবিবারেই জেনে গিয়েছে ডোমকল

ভোট নিয়ে চুপ চায়ের দোকান, মাচা

পাড়ার মাচায় লোক আছে। ভিড় আছে চায়ের দোকানেও। কিন্তু ভোট নিয়ে রা কাড়ছেন না।সোমবার ডোমকলে একটি চায়ের দোকানে ঢুকেই পড়শি গ্রামের এক যুবক জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘চাচা, ভোট তো হল। হাওয়া কোন দিকে?’’

খুনসুটি: খুদের সঙ্গে হাত মেলাল স্ট্রংরুমের পাহারায় থাকা এক জওয়ান। ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র

খুনসুটি: খুদের সঙ্গে হাত মেলাল স্ট্রংরুমের পাহারায় থাকা এক জওয়ান। ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র

সুজাউদ্দিন
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০২:২৮
Share: Save:

পাড়ার মাচায় লোক আছে। ভিড় আছে চায়ের দোকানেও। কিন্তু ভোট নিয়ে রা কাড়ছেন না।

সোমবার ডোমকলে একটি চায়ের দোকানে ঢুকেই পড়শি গ্রামের এক যুবক জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘চাচা, ভোট তো হল। হাওয়া কোন দিকে?’’

চায়ের গেলাস ঠক করে বেঞ্চিতে নামিয়ে চায়ের দোকানের মালিক বললেন, ‘‘দেখো বাপু, চা খেতে এসেছ, খাও। টিভিতে সিনেমা চলছে, দেখো। কিন্তু ভোট নিয়ে একটা কথাও এখানে হবে না।’’ আসলে, ফল তো রবিবার ভোটের পরেই জেনে গিয়েছে ডোমকল। তাই আর কোনও তর্কবিতর্ক নেই। ছবিটা একই পাড়ার মাচাতেও। কালবৈশাখী, আম, পাটখেত, গরম সবই আছে, কিন্তু ভোট নিয়ে কথা নেই। মাচায় বসে মনমরা মহুরুদ্দিন বললেন, ‘‘যা হয়েছে ভাল হয়েছে, উইকেট তো আর পড়েনি! ভোট নিয়ে কথা বাড়িয়ে মাচা গরম করার কোনও দরকার নেই।’’

অন্য বার ডোমকলে ভোট মানেই হইহই ব্যাপার। দেওয়াল লিখন থেকে ফল ঘোষণার পরেও আলোচনার অন্ত থাকে না। কাঠফাটা সন্ত্রাসের পরে দিনটা ছিল মেঘলা। কিন্তু আড্ডা জমল না। শেয়ালমারির পাড়ে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের ছাত্রনেতা বললেন, ‘‘আমরা তো স্লোগানেই বলেছিলাম দাদা, ‘ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল, এ বার জিতবে তৃণমূল।’ দেখছেনই তো, সব কেমন ঠান্ডা মেরে গিয়েছে!’’

জনকল্যাণ ময়দান ঘেঁষে কংগ্রেস কার্যালয় আর সিপিএম পার্টি অফিস রবিবার সকাল পর্যন্তও গমগমে ছিল। এখন প্রায় শ্মশানের চেহারা।

এর আগে অনেক নির্বাচন দেখেছে ডোমকল। ভোটের আগে-পরে অন্তত এক মাস হাওয়া গরম থেকেছে। ভাগ হয়েছে মাচা, ভাগ হয়েছে গ্রাম। তর্কাতর্কি থেকে হাতাহাতির নজিরও কম নেই। কিন্তু এ বার ‘অন্য ভোট’ দেখে ডোমকল চুপ। তবে ফিসফিসে কথায় নেতাদের প্রতি ক্ষোভ উসকে উঠেছে জোটের কর্মীদের। ডোমকল বাজারে চায়ের দেকানে বসে চাপা গলায় এক জন বলেন, ‘‘ভোটের সময়ে বাইরে থেকে নেতারা উড়ে আসবে, আর হাওয়া গরম করা কথা বলে চলে যাবে। আমাদের গাছে তুলে টিভির সামনে বসে থাকবে!’’ তাঁর মতো অনেকেই ঠিক করে ফেলেছেন— ‘‘আর নয়, এখন থেকে নিজের কাজ করব, আর পান্তা ভাতে ফুঁ দিয়ে খাব।’’

প্রতি বার এই সময়ে কারা কখন গণনাকেন্দ্রে যাবে, কোথা থেকে ঢাক বা আবীর আনা হবে, তা নিয়ে কথার শেষ থাকে না। এ বার তৃণমূল ছাড়া আর কারও সে সবে উৎসাহ নেই। কংগ্রেসের শাওনী সিংহ রায়ের বক্তব্য, ‘‘মানুষ বুঝে গিয়েছে, এখন চুপ থাকাটাই ভাল।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষের দাবি, ‘‘কখনও-কখনও মানুষ মৌন থেকেই প্রতিবাদ করে, এটাও তাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipality Election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE