তখনও চলছে অবরোধ। ইনসেটে, শূন্যে গুলি ছুড়ছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।
লরি থেকে ইট নামিয়ে দুপুরে খাওয়ার জন্য বাড়ি ফিরছিলেন ফরাক্কার বলিদাপুকুরে বাসিন্দা জামাল শেখ (২৬)। ফরাক্কার জিগরি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ দেখে রাস্তার ডান দিকের পথ ধরে ভিড় এড়াতে চেয়েছিলেন ওই যুবক। ঠিক তখনই গুলি ছিটকে লাগে তাঁর পেটে। রক্তাক্ত অবস্থায় পথেই লুটিয়ে পড়েন তিনি।
কলকাতা থেকে গ্রামে ফিরছিলেন জিগরি গ্রামের রাজমিস্ত্রি সোলেমান শেখ। আর একটি গুলি এসে লাগে তাঁর ডান হাতে। জখম অবস্থায় তিনি এখন ধুলিয়ানের অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। হেনা খাতুনের বয়স ১০ বছর। মায়ের সঙ্গে বাস ধরার জন্য জিগরি মোড়ে আসছিল সে। হঠাৎ একটা থান ইট উড়ে এসে পড়ে হেনার মাথায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকেও ভর্তি করা হয় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। ওই তিন জনের কেউই পথ অবরোধ করেননি। ঘটনার কথাও সে ভাবে তাঁরা জানতেন না। অথচ রবিবার দুপুরে জিগরির পথ অবরোধের ঘটনায় পুলিশ ও জনতার খণ্ডযুদ্ধে একজন মারা গেলেন। জখম হয়েছেন সোলেমান ও হেনা।
ফরাক্কার মহেশপুর, নয়নসুখ, অর্জুনপুর ও মহাদেবনগর এলাকায় বেশ কিছু দিন ধরেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। গত তিন দিনে তা চরমে পৌঁছয়। স্থানীয় বিদ্যুৎ দফতরে বিষয়টি জানিয়েও বিশেষ লাভ হয়নি। শনিবার মাইকে প্রচার করা হয়, রবিবার বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।
সেই মতো সকাল সাড়ে আটটায় ফরাক্কার জিগরি মোড়ে অবরোধ শুরু হয়। জমায়েত হন অন্তত এক হাজার মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সংখ্যাটা আরও বাড়তে থাকে। এ দিকে অবরোধের গুঁতোয় রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তখনও উত্তেজিত জনতা ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধেও। পুলিশ ও অবরোধকারীদের বেশ কয়েকজন জখম হন। গুরুতর জখম হন ফরাক্কার আইসি সমীররঞ্জন লালাও।
স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পেলেও বিশ্বাস করতে পারেননি স্ত্রী চেনবানু বিবি। তিনি বলছেন, ‘‘বলেছিল বাড়ি ফিরে ভাত খাবে। ভাত বেড়ে বসে আছি। মানুষটাই এল না!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy