কেরলের অঙ্গামালি থেকে চেন্নাই বারো ঘণ্টার রাস্তা। এখন সেই রাস্তা আসতে সময় লাগছে ছত্রিশ ঘণ্টারও বেশি। আর ভিড়? আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গিয়েছে বলেই দাবি কেরল ফেরত মুর্শিদাবাদের শ্রমিকদের। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রতি বছর পুজো-পরবের আগে আমরা ঘরে ফিরি। গত দশ বছরেও এমন ভয়ঙ্কর ভিড় দেখিনি।’’
তাঁরা জানাচ্ছেন, ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে পা ফেলার উপায় নেই। জল ছাড়া কিছুই পেটে পড়েনি। এ দিকে, শৌচাগারে যাওয়ারও উপায় নেই। কারণ, কামরায় দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে নিরুপায় হয়ে সেখানেও ভিড় করে বসে আছেন যাত্রীরা। ডোমকলের সফিকুল ইসলাম বলছেন, ‘‘৩৬ ঘণ্টার পথ টানা দাঁড়িয়ে এসেছি। এমন ভোগান্তি জীবনে কোনও দিন হয়নি।’’
ডোমকলের কলাবাড়িয়ার সাহাদুল ইসলাম বলছেন, ‘‘পকেটে কিছু টাকা ছিল। তা দিয়ে খাবারও কেনা যেত। কিন্তু ট্রেনে এতটাই ভিড় ছিল যে নামতে পর্যন্ত পারিনি। কারণ, নামলে আর উঠতে পারতাম না। এ দিকে ভিড়ের দাপটে কোনও হকারও ওঠেনি।’’
রবিউল ইসলাম খন্দকার প্রায় দশ বছর থেকে কেরলেই ছিলেন। এর্নাকুলামের পথঘাট তাঁর হাতের তেলোর মত চেনা। কিন্তু একটা শহর যেন রাতারাতি সমুদ্রের চেহারা নিয়েছে। চেনা অলিগলিও কেমন নতুন মনে হচ্ছিল তাঁর কাছে। তিনি বলছেন, ‘‘খাবারের অভাব, প্ল্যাটফর্মেই শুয়ে আছে লোকজন। বানের জল পেরিয়ে এসেও যেন বিপদ পিছু ছাড়ছিল না। কলাবাড়িয়ার ওয়াশিম শেখ এখনও আছেন কেরলের ত্রিশুেল। ফোনে তিনি বলছেন, ‘‘অনেকেই তাদের সঙ্গে বাড়ি যাওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তখনও ভাবিনি এমন পরিস্থিতি হবে। ফলে থেকে গিয়েছি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওদের সঙ্গে বাড়ি ফিরলেই ভাল হত। এখন কবে, কী ভাবে বাড়ি ফিরব, জানি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy