Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুরভোটে পরীক্ষা পুলিশেরও

চাপা সন্ত্রাস, বোমা-বন্দুকের দেদার ব্যবহার কিংবা কড়া নেড়ে ঠান্ডা গলায় শাসিয়ে যাওয়া—‘বুথের দিকে পা বাড়াবেন না।’ ডোমকলের ভোটের এমন চেনা আবহের শেষবেলায় নড়েচড়ে বসল পুলিশ। আজ, রবিবার পুরভোট।

আজ-ভোট: বুথে যাওয়ার আগে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে ইভিএম। শনিবার ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

আজ-ভোট: বুথে যাওয়ার আগে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে ইভিএম। শনিবার ডোমকলে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:২০
Share: Save:

চাপা সন্ত্রাস, বোমা-বন্দুকের দেদার ব্যবহার কিংবা কড়া নেড়ে ঠান্ডা গলায় শাসিয়ে যাওয়া—‘বুথের দিকে পা বাড়াবেন না।’

ডোমকলের ভোটের এমন চেনা আবহের শেষবেলায় নড়েচড়ে বসল পুলিশ। আজ, রবিবার পুরভোট। শনিবার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে ভোট করাতে যা করণীয় তাই করা হবে। কোনও কিছুর সঙ্গেই আপস করা হবে না।’’

আচমকা পুলিশের এমন মেজাজে বিস্মিত ডোমকলের এক বৃদ্ধ বলছেন, ‘‘ভোটের আগে পুলিশের এমন মেজাজ আগে তো কখনও দেখিনি বাপু!’’ তৃণমূলের অন্দরেও ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশ্নটা, ‘‘হঠাৎ করে হলটা কী?’’ পুলিশ সূত্রে খবর, নদিয়া ও হাওড়ায় প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশকে এক হাত নিয়েছেন। ফলে সুষ্ঠ ভাবে ভোট করানোটা পুলিশের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাতে কোনও ভাবেই মুখ না পোড়ে তার জন্য পুলিশ সব রকম ভাবে তৈরি থাকছে।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন তার পরেও যদি ডোমকলে অশান্তি হয় তাহলে কিন্তু মুশকিল হয়ে যাবে। এই ভোটটা আমাদের কাছেও বড় পরীক্ষা।’’ ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৪ জন খুন হয়েছিলেন। গত বিধানসভাতেও গোটা রাজ্যে এক জনই খুন হয়েছিলেন। ঘটনাস্থল ডোমকল!

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরভোটে ৩২০ জন থেকে পুলিশের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে শনিবার সন্ধ্যায় দাঁড়িয়েছে হাজার খানেক। রাফ ও কমব্যাট ফোর্স থাকবে। আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি থাকছে কাঁদানে গ্যাস, রবার বুলেট। থাকছে সিআইডি থেকে আনা দু’টো কুকুর। ডোমকলে থাকার কথা আইজি, ডিআইজি-সহ জনাকয়েক আইপিএস অফিসার ও এসডিপিও পদমযার্দার ৪ জন অফিসার। প্রতিটি বুথে থাকবে মহিলা পুলিশও।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডোমকলের ৮০ শতাংশ বুথকেই স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিশেষ করে বর্তনাবাদ, মেহেদিপাড়া ও আমিনাবাদ এলাকায় কড়া নজরদারি চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, ডোমকল ও লাগোয়া এলাকায় সমাজবিরোধীরা আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশের দাবি, তারা কোনও ভাবেই সুবিধা করতে পারবে না এ দিন।


বিশ্রাম: ডিউটিতে যাওয়ার আগে। ডোমকলে। —নিজস্ব চিত্র।

ডোমকল পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নজর রয়েছে সকলের। সেখানকার প্রার্থী তৃণমূলের যুবনেতা সৌমিক হোসেন। দিন কয়েক আগে ওই এলাকায় গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বিধায়ক আনিসুর রহমান ও সাংসদ বদরুদ্দোজা খান। গত বিধানসাভায় সিপিএম কর্মী খুন হওয়া হরিডোবাতেও কড়া নজর রাখা হবে পুলিশ জানিয়েছে।

এ দিন কৃষ্ণনগরে অধীরবাবু সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “ডোমকলে শান্তিপুর্ণ ভোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। শান্তিপুর্ণ ভোট হলে আমরাই জিতব। ডোমকলে গণ্ডগোল হবে বলে হাসপাতালে রক্ত মজুত রাখা হচ্ছে। সরকার গণ্ডগোল না আটকে আহতদের চিকিতসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, ডোমকলে তৃণমূলের লোকজন প্রকাশ্যে বন্দুক নিয়ে ঘুরছে। পুলিশ তা দেখেও কিছু বলছে না। তৃণমূল অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE