প্রতীকী ছবি।
খুনের বদলা খুন, তার বদলা আবার খুনের চেষ্টা।
এমন চিত্রনাট্যই নাকি লেখা হচ্ছিল ডোমকলে। পুলিশ আঁচ পেয়ে যাওয়ায় শেষমেশ তা ভেস্তে গিয়েছে।
একটি দামি গাড়িতে সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে বহরমপুরের দিকে যাওয়ার সময়ে গাড়ি আটকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ডোমকল পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলরের ছেলেকে। পুলিশের দাবি, তাদের কাছে চারটি ভোজালি পাওয়া গিয়েছে।
ডোমকলে বোমা-গুলি-ধারাল অস্ত্রের আনাগোনা নতুন কিছু নয়। ভোটের সময়ে অশান্তি তো প্রায় রুটিন। আপাতত স্থগিত হয়ে গেলেও সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। কাজেই পুলিশের তৎপরতাও একটু বেশি রয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটে গেল, যেখানে অভিযুক্তের রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকলেও ঘটনার মধ্যে রাজনীতির কোনও ছোঁয়াচ নেই।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে ডোমকল পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজেদা বেওয়ার ছেলে ইলিয়াস কাঞ্চনকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে ওই গাড়িতে থাকা ন’জনকে পাকড়াও করে দৌলতাবাদ থানার পুলিশ। অভিযোগ, ডাকাতির উদ্দেশ্যে জড়ো হওয়া। বহরমপুর আদালতে তোলা হলে তাদের ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের দাবি, ডাকাতির চেষ্টায় জড়ো হওয়ার ধারায় গ্রেফতার হলেও সম্ভবত মিরশাদ শেখ নামে এক জনকে খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে বহরমপুরে যাচ্ছিল ১০ জনের দলটি। বছর দেড়েক আগে খুন হন ইলিয়াসের বাবা ইয়ার আলি। সেই খুনে অভিযুক্ত ছিল মিরশাদ। পুলিশ তাকে ধরে, পরে সে জামিনে ছাড়াও পেয়ে যায়। কিন্তু মাদক পাচারের এক মামলায় আপাতত সে বহরমপুর জেলে বন্দি। এ দিন তার আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। সেই খবর পেয়েই ইলিয়াস আদালত চত্বরে ঢুকে তাকে খুন করার ছক কষেছিল বলে পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দাদের
একাংশের অনুমান।
ইয়ার আলি খুন হওয়ার পিছনেও সম্ভবত বদলা-খুনেরই গল্প ছিল। এক সময়ে মিরশাদের বাবা ও ভাইকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল ইয়ারের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, সেই খুনের বদলা নিতেই মোটরবাইকে চেপে ডোমকলের শেখপাড়া মোড়ে এসে মিরশাদ ইয়ারকে খুন করেছিল বলে অভিযোগ। এখন ইয়ারের ছেলে আবার বদলার চাকা ঘোরাতে চাইছে বলে অনেকের অনুমান।
পুলিশ জানায়, ইলিয়াস ও তার নয় সঙ্গীকে নিয়ে ঝড়ের গতিতে বহরমপুরের দিকে যাচ্ছিল দামি একটা গাড়ি। সামনের আসনে ইলিয়াস। মাঝে এবং পিছনের সারিতে তার সঙ্গীসাথিরা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তারা গাড়িটি আটকায়। হাতেনাতে ধরা পড়ে চারটি ভোজালি।
ডোমকলের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সাজেদা বেওয়া অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমার ছেলেকে মিথ্যে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার ছেলে এ দিন বহরমপুরে অন্য কাজে যাচ্ছিল।’’ আর ডোমকলের পুরপ্রধান সৌমিক হোসেন বলেন, ‘‘ইলিয়াসের মা আমাদের কাউন্সিলর, ইলিয়াস আমাদের কেউ নয়। আইন আইনের পথে চলবে। ডোমকলে কোনও অশান্তি আমরা চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy