দুর্ঘটনা কমাতে মুখ্যমন্ত্রী সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচির নির্দেশ দিয়েছিলেন। বছর তিনেক আগে সেই নির্দেশ পাওয়ার পর রাজ্যের অন্য জেলার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও লাগাতার কর্মসূচি নিয়েছে জেলা পুলিশ।
সেই সঙ্গে, দুর্ঘটনা এড়াতে জেলার ১১টি থানাকে চিহ্নিত করে তকমা দেওয়া হয়েছিল দুর্ঘটনা প্রবণ।
প্রতি ১৫ দিন অন্তর, সেই থানা এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার। আর তাতে সাফল্যও মিলেছে।
জেলা পুলিশের দেওয়া হিসেব বলছে, ২০১৭ সালের তুলনায় গত বছর প্রায় ৩৮ শতাংশ দুর্ঘটনা কমেছে ওই থানা এলাকায়।
এ বারে ১১টি থেকে কমে দুর্ঘটনা প্রবণ থানা হয়েছে ৬টি। সেই ৬টির মধ্যে চারটি থানার উপর দিয়ে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। বাকি দু’টি থানার বুক চিরে গিয়েছে জেলার গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়ক। ওই সব থানার আইসি, ওসিদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক করছেন পুলিশকর্তারা।
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা প্রবণ থানাগুলিকে চিহ্নিত করে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় নেওয়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যার ফলে জেলায় ৩৮ শতাংশ দুর্ঘটনা কমাতে সক্ষম হয়েছি।’’
যে ৬ টি থানা চিহ্নিত হয়েছে সেই তালিকায় রয়েছে রেজিনগর, বেলডাঙা, বহরমপুর ও নবগ্রাম থানায়। যাদের উপর দিয়ে চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। রেজিনগর থানা এলাকায় গত এক মাসে জাতীয় সড়কে তিনটি দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি রেজিনগরের মরাদিঘি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে দু’টি লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক লরি চালকের মৃত্যু হয়। ঠিক তার পরের দিনে ঘটনাস্থল থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে লরির ধাক্কায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সে দিন বেলডাঙা থেকে বরযাত্রী বোঝায় টাটাসুমো রেজিনগরের দিকে যাচ্ছিল। মরাদিঘি মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরির ধাক্কায় টাটা সুমোতে থাকা তিন জনের মৃত্যু হয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি রেজিনগর মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে লরির ধাক্কায় বেলডাঙা ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ছোটখাটো দুর্ঘটনায় লেগেই রয়েছে। গত বছর ২০ জানুয়ারি বেলডাঙার বেগুনাবাড়িতে নয়ানজুলিতে বাস উল্টে ৯ জনের মৃত্যু হয়। সঙ্গে রয়েছে নিয়মিত বাইক দুর্ঘটনা, বাস লরির ধাক্কা।
গত এক বছরে জেলা সদর বহরমপুর থানা এলাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটলেও ছোটখাটো ঘটনা লেগেই রয়েছে। বাইক থেকে লরি-বাসের ধাক্কায় মৃত্যুর মতো প্রায় নিত্য ব্যপার। প্রায় একই ঘটনা ঘটে চলেছে কান্দি থানা এলাকাতেও।