আওয়াজখানা, দিচ্ছে হানা...। দিল্লি-বর্মা নয়, জগদ্ধাত্রীপুজো মানেই তেহট্টে মাইকের অমাইক যন্ত্রণা।
এ বছর তাই উৎসব শুরুর আগেভাগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করল পুলি— তারস্বরে বা উচ্চশব্দের মাইক (ডিজে) বাজানো চলবে না।
শুধু তেহট্টতেই এ বছর সব মিলিয়ে প্রায় সত্তরটি পুজো হচ্ছে। বেশির ভাগ পুজো মণ্ডপেই পুজোর দু’দিন ও বিসর্জনের শোভাযাত্রায় কানফাটানো শব্দে মাইক বাজানো হয়। ফলে পুজোর আনন্দে দুর্ভোগ পোহাতে হয় অনেককেই। প্রতিবাদ করেও লাভ হয় না। সে কথা মাথায় রেখে শুক্রবার রাতে পুলিশ তেহট্ট থানায় স্থানীয় পুজো উদ্যোক্তা, প্যান্ডেল ব্যবসায়ী ও মাইক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসে। তাদের কাছে পুলিশের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন তেহট্টের এসডিপিও দীপক সরকার।
তিনি বলেন, “এ বছর সাধারণ মাইক বাজানোর অনুমতি দেওয়া হলেও উচ্চ শব্দের মাইক বা ডিজে ব্যবহার নিষেধ করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে থাকবে পুলিশের নজরদারি। নিষেধ অমান্য করলেই, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ জানিয়েছে, কিছু দিন আগে কালীপুজো উপলক্ষে পুলিশ প্রশাসন কড়া নজরদারি চালিয়ে বেশ কিছু নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার করেছিল। কয়েক জন ব্যবসায়ীকে নিষিদ্ধ শব্দ বাজি বিক্রির অপরাধে গ্রেফতারও করা হয়। ফলে কালীপুজোতে শব্দের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিল সকলে। এ বারও পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, এলাকার সাধারণ মানুষ। তেহট্টের বাসিন্দা পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধ দর্পনারায়ণ ভট্টাচার্য বলেন, “প্রতি বছর পুজোর ক’দিন এই উৎপাত সহ্য করতে হয়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষ ও শিশুদের। বাঁচা গেল।!’’
পুলিশের এই উদ্যোগটা যে ভাল, মেনে নিচ্ছেন মাইক ব্যবসায়ীরা। বাসুদেব কর্মকার যেমন বলেন, “এ বছর দু’টো পুজো মণ্ডপে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকার মাইক ভাড়া হয়েছিল। পুলিশের এ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সেগুলো বন্ধ হয়ে গেল। আস্তে করেও তো মাইক বাজানো যায়। কিন্তু প্রত্যেক পুজো মণ্ডপেই কিছু যুবকের আবদারে অমন বিকট শব্দে মাইক বাজাতে হয়। সত্যিই অনেককে সমস্যার মুখে পড়তে হয়। প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ব্যবসায় ক্ষতি হলেও সার্বিক ভাবে ভাল হল।”
তেহট্টের জিতপুর মোড়ে একটি পুজো কমিটির কর্তা প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, “পুজোর অনুমতিপত্রে পুলিশ জানিয়ে দিয়েছিল। মাইকের বিকট শব্দে আমরাও সমস্যায় পড়তাম। কিছু অত্যুৎসাহী যুবকদের জন্য মাইক বন্ধ করা যেত না। এ বছর পুলিশের নির্দেশে ডিজে বন্ধ হয়ে ভালই হবে।”