Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

কড়া পুলিশ, পড়ল লাঠি

কৃষ্ণনগর পুলিশজেলায় আইন ভাঙার জন্য এ দিন ১১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জখম সাফাইকর্মী। নিজস্ব চিত্র

জখম সাফাইকর্মী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন 
শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৩:০০
Share: Save:

লকডাউন সফল করতে দু’-একটি জায়গায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সক্রিয়তার অভিযোগ উঠলেও সামগ্রিক ভাবে জেলায় এ দিন তাদের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে।

বুধবার শুধু সিভিক ভলান্টিয়ার বা কনস্টেবল-ই নয়, জেলা পুলিশের সর্বস্তরের কর্তাদের রাস্তায় নেমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করতে দেখা গিয়েছে। ওষুধ বা অন্য কোনও জরুরি প্রয়োজনে যাঁদের এ দিন রাস্তায় বের হতেই হয়েছে তাঁদের বেশির ভাগকেই বিভিন্ন মোড়ে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। সঠিক ও উপযুক্ত কারণ দেখাতে না পারলে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কৃষ্ণনগর পুলিশজেলায় আইন ভাঙার জন্য এ দিন ১১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রানাঘাট পুলিশজেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৪০ জনকে। নাকাশিপাড়া থানা এলাকায় ১৪ জনকে ও নবদ্বীপে বুধবার বেলা দু’টো পর্যন্ত ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই বলেন, “লকডাউন সফল করতে আমরা সকলেই রাস্তায় ছিলাম। কড়া হাতে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।”

এ দিন সকাল থেকেই কৃষ্ণনগরের রাস্তাঘাট ফাঁকাই ছিল। বেলার দিকে যে দু’-একদন বেরিয়েছিলেন তাঁদের পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। শহরে ঢোকার রাস্তা গুলিতে কড়া ভাবে নাকা করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। কল্যাণী ও আশপাশে সব দোকানপাট ছিল বন্ধ। সকালেই পুলিশ এখানকার সব বাজারে সরেজমিনে ঘুরে দেখে। সকালের দিকে সীমান্ত স্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় কয়েকটি টোটো রাস্তায় নেমেছিল। সেগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহরের সেন্ট্রাল পার্ক, মেন স্টেশন এলাকার অটো ও টোটো স্ট্যান্ড ছিল পুরোপুরি ফাঁকা। জেআইএস কলেজ মোড় দিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বহু মানুষ রোজ কল্যাণী আসেন। একাধিক বার পুলিশ ওই মোড়ে টহল দিয়েছে। চাঁদামারি এলাকায় রোজই ভিড় হয়। এ দিন সকালে পুলিশ ভিড় হঠিয়ে দেয়।

তেহট্ট বাজার এলাকা থেকে শুরু করে বেতাই বাজার, সবই এ দিন ছিল লোকশূন্য। তেহট্ট থানার আইসি নিজেই পুলিশ বাহিনী নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালান। তেহট্ট খেয়া ঘাটে নৌকা চলাচল বন্ধ ছিল। শুধু স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এবং জরুরী পরিষেবা হিসাবে কিছু নৌকা চলেছে। বিকেল তিনটে পর্যন্ত সেখানে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

বুধবার কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছিলেন কৃষ্ণনগর পুরসভার সাফাইকর্মী সুরেশ রাউত। অভিযোগ রাস্তায় তাঁকে মারধর করেছে পুলিশ। ওই কর্মীর অভিযোগ, বাসস্ট্যান্ডের পাশে পুরসভার জলকল চত্বরে ময়লা ফেলার ট্রাক্টর থাকে। পুরসভায় হাজিরা দিতে তিনি বাইকে চেপে সেখানে যাচ্ছিলেন। তাঁর গলায় পরিচয়পত্র ও মুখে মাস্ক থাকা সত্বেও পুলিশ বাসস্ট্যান্ডের ট্রাফিক স্ট্যান্ডের সামনে তাঁকে আটকে লাঠি দিয়ে মারে।

যদিও পুলিশের দাবি, তাঁর কাছে পরিচয়পত্র ছিল না। মুখে মাস্কও ছিল না। তিনি কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। তাঁকে মারধরের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা অন্যতম প্রশাসক অসীম সাহা বলেন, “এমন কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। তবে যদি কারও কাছে পরিচয়পত্র না থাকে, মুখে মাস্ক না থাকে তা হলে এই লকডাউনের দিনে পুলিশ তাঁকে মারলে তাতে আমি কোনও অন্যায় দেখি না।’’

কৃষ্ণনগর পুলিশজেলার সুপার জাফর আজমল কিদোয়াই বলেন, “বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Lathicharge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE