দুষ্কৃতীদের দু’টি গোষ্ঠীর বোমাবাজিতে জখম হলেন সাত জন। বুধবার রাতে নদিয়ার গয়েশপুরের এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালেও উত্তেজনা ছিল। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনার পিছনে রয়েছে। অভিযোগ মানেনি তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ঘটনায় আহতদের এক জনের পরিবারের পক্ষ থেকে চার জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, তখন রাত সাড়ে ন’টা। গয়েশপুর শহরের লক্ষ্মীর মোড় এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে গল্প করছিলেন জনা কয়েক যুবক। এক দল যুবক মোটর বাইকে চেপে এসে দাঁড়ায় দোকানের সামনে। কাপড়ে মুখ ঢাকা ওই যুবকদের দেখে আরও কয়েক জন আশপাশের গলি থেকে বেরিয়ে আসতেই শুরু হয় দু’পক্ষের বোমাবাজি। মানুষ ভয়ে এ দিক ও দিক পালাতে শুরু করে। আড্ডায় থাকা লোকজন থেকে শুরু করে বাড়ি ফেরত মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। হুড়োহুড়ির মধ্যে প়ড়ে আহত হন কয়েক জন। তাঁদের কল্যাণী জওহর লাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, এলাকায় সাট্টার অবৈধ ঠেক চলে। কাঁচা টাকার নেশায় ওই ঠেকে ভিড়ও হয়। ওই রাতেও খেলা চলছিল। হঠাৎই একদল দুষ্কৃতী হানা দেয়। বোমাবাজি করে। সঙ্গে সঙ্গেই তার জবাব দেয় অন্য গোষ্ঠী। সিপিএম অবশ্য এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দিকে আঙুল তুলেছে। বিরোধী দলের নেতাদের দাবি, এলাকার তৃণমূল পুরপ্রধান মরণকুমার দে এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদীপ সরকার ওরফে লাল্টুর সঙ্গে দ্বন্দ্বেরই জেরে ওই বোমাবাজি হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিতকুমার দে-এর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে। এলাকার দখল নিয়ে নেতাদের গোলমালে ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদেরও একাংশের যুক্তি, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় গয়েশপুর পুরবোর্ডের দখল নেওয়ার পর থেকে এখন পুরসভায় বিরোধীরা নেই বললেই চলে। তৃণমূলই সেখানে শেষ কথা। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আগে দুষ্কৃতীরা সিপিএমের সঙ্গে থাকত। এলাকায় দাদাগিরি করত। তারাই এখন তৃণমূলে ভিড়েছে। এলাকার দখল নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই লড়াই চলে।’’
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ মানেননি অভিযুক্ত নেতাদের কেউই। স্থানীয় নেতাদের সুরেই সাফাই দিয়েছেন নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত। তাঁর দাবি, ‘‘ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। ওটা দুষ্কৃতীদের লড়াই।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy